ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা ১৬ বছরের কিশোরী, ১৩ লাখ টাকায় দফারফা
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:৫২
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সৌদি প্রবাসীর ধর্ষণে ১৬ বছরের এক কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বারদী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে সালিশে ১৩ লাখ টাকা রফাদফা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগ উঠেছে, বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দুই বিএনপি নেতা এ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ১৩ লাখ টাকা থেকে তিন লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক মধ্যপাড়া গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী আব্দুর রব ১৬ বছর বয়সী এক মেয়েকে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন। পরে ওই কিশোরী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে সালিশ বসে।
বৈঠকে বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া এবং বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আব্দুল কাদির ও স্বপনসহ তাদের লোকজন ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগে।
আরও জানা গেছে, বৈঠকে প্রবাসী আব্দুর রবকে ১৩ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য রফাদফা করে। বৈঠকে আব্দুর রব মিয়া নগদ ৩ লাখ টাকা বিএনপি নেতা শাহজাহানের কাছে দেয়। তবে বুধবার পর্যন্ত ওই টাকা ভূক্তভোগী কিশোরীর পরিবার পাননি বলে দাবি করেছেন। তবে ওই টাকা শাহজাহারের কাছে গচ্ছিত বলে দাবি স্থানীয়দের। বাকি ১০ লাখ টাকা আগামী ২০ জানুয়ারি দেওয়ার কথা।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে সালিশে উপস্থিত থাকা একজন বলেন, ১৩ লাখ টাকা রফাদফার পরও বিএনপির দুই নেতাকে আরো ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়। তিন লাখ টাকা তারা ভাগবাটোয়ারা করার জন্য এ বিচার সালিসে এ রায় প্রদান করে।
ভূক্তভোগী কিশোরীর ভাবি বলেন, ভূক্তভোগী কিশোরীকে ধর্ষণের বিষয়টি জানাজানি হলে সমাধানের আশ্বাস দেয় ধর্ষকের পরিবার। গড়িমসির কারণে কিশোরী সাতমাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সমাধান না করায় সালিশ ডাকা হয়। সেখানে ১৩ লাখ টাকায় রফাদফার সিদ্ধান্ত হয়। ৩ লাখ টাকা নগদ দেওয়ার পরও কিশোরীর পরিবার এক টাকাও পায়নি। পাশাপাশি সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর আব্দুর রবকে দিয়ে দেওয়া হবে।
অভিযুক্ত আব্দুর রবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী জোহরা বেগমের দাবি, তার স্বামী এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত না।
তবে কেন ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, সালিশী বৈঠক হয়েছে। কিশোরী ও অভিযুক্তদের কথা শুনে বৈঠকে এলাকাবাসী ১৩ লাখ টাকার রায় দিয়েছে। তবে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সঠিক নয়।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওএফ