Logo
Logo

সারাদেশ

ঝিনাইদহে পুকুরে আরও এক শিশুর মৃত্যু

Icon

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৫১

ঝিনাইদহে পুকুরে আরও এক শিশুর মৃত্যু

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পুকুরের পানিতে গোসলে নেমে নিখোঁজ থাকা তাসনিম খাতুন (১১) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিশু তাসনিমের মরদেহ উদ্ধার করে ডুবুরি দল। এ নিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই জনে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার বেথুলী গ্রামের একটি পুকুরে গোসলে নামেন তিন শিশু। পরে দুপুর দেড়টার দিকে পুকুর থেকে ফাতেমা খাতুন (৮) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় জীম খাতুন (১০) নামের এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ ছিলেন তাসনিম খাতুন। 

নিহত ফাতেমা খাতুন উপজেলার বেথুলী মন্ডলপাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। ফাতেমা বেথুলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তাসনিম উপজেলার আলাইপুর গ্রামের আব্দুল বারেকের মেয়ে। তাসনিম বেথুলী গ্রামের নানা দুখু মিয়ার বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন। তিনি আলাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

জীবিত উদ্ধার হওয়া জীম বেথুলী গ্রামের মোফাজেল হোসেনের মেয়ে।

উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার ফাতেমা পানিতে নেমে সাতার কাটা শুরু করেন। এটা দেখে তাসনিমও পানিতে নামেন। এ সময় ফাতেমা ও তাসনিম একজন আরেকজনের ধরাধরি করার সময় পানিতে তলিয়ে যান। তলিয়ে যাওয়া দেখে জিম তাদের উদ্ধার করতে পানিতে নামেন। এ সময় জিমও তলিয়ে যান। পাশে থাকা সাব্বির হোসেন নামের এক শিশু চিৎকার করতে থাকেন। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে শিশু জীমকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। একই সময় পুকুরের একপাশে ফাতেমা খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে নিখোঁজ ছিলেন তাসনিম।

খবর পেয়ে কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল সেখানে এসে তাসনিমকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। পরে খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসের খুলনা ডুবুরি দলকে। সন্ধ্যা রাত ৭টার দিকে লিডার সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। মাত্র ১৫ মিনিটের অভিযানে তাসনিমকে উদ্ধার করে ডুবুরিরা।

ওই গ্রামের বাসিন্দা রহমত আলী বলেন, ছোট বাচ্চাদের কাছে খবর পেয়ে আমিসহ অন্যরা পুকুরে যান। সেখাানে গিয়ে জীম ও ফাতেমাকে উদ্ধার করা গেলেও তাসনিমকে উদ্ধারকে সম্ভব হয়নি। পানির গভীরতা বেশি হওয়ায় সে হারিয়ে যায়। পরে রাতে খুলনা থেকে ডুবুরিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাসনিমকে উদ্ধার করে।

নিহত ফাতেমার মা সালেহা বেগম বলেন, জিমের চুল ধরে ডাঙ্গায় তুলে আনি। এরপর আমার মেয়ে ফাতেমাকে খুঁজতে থাকি। কিছুক্ষণ পর আমার মেয়ে ফাতেমাকেও তুলে আনি। কিন্তু তখন আর ফাতেমা বেঁচে ছিল না। জিমকে বাঁচাতে পারলাম, আমার মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না।

কালীগঞ্জ ফায়ার সাভিসের স্টেশন অফিসার শেখ মামুনুর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানীয়দের সহযোগীতায় নিখোঁজ তাসনিমকে উদ্ধারের চেষ্টা করি। কিন্তু সন্ধা পর্যন্ত তাকে পাওয়া যায়নি। পুকুরে গভীরতা প্রায় ২০ ফুট হওয়ায় উদ্ধার কাজে সমস্যা দেখা দেয়। যে কারণে আমরা খুলনা ডুবুরি দলকে খবর দিই। তারা সন্ধ্যা রাত ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাসনিমকে উদ্ধার করে। কেউ পানিতে তলিয়ে গেলে গরমকালে ২৬ ঘণ্টা এবং শীতকালে ৪৮ ঘণ্টা পর মানবদেহ ভেসে উঠে।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় একটা অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।

এম বুরহান উদ্দীন/এমজে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর