খেজুর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত চলনবিলের গাছিরা
মাল্টিমিডিয়া করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:০৯
খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীতের শুরুতেই ভোর বেলায় শহর থেকে নানা পেশার মানুষ পল্লিগ্রামে এসে খেজুরের রস সংগ্রহ করতে আসেন। পাশাপাশি রস জ্বালিয়ে তৈরি করা গুড়ের চাহিদাও বেশি।
চলনবিলের তাড়াশ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে গাছিরা বর্তমানে খেজুরের রস দিয়ে পাটালি ও ঢিমা বা লালি গুড় তৈরি করে তা বিক্রি করছেন। যা তাদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবান করছে।
গাছিরা জানান, শীতের মৌসুমে প্রতি বছরই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে শুরু করেন। প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় গাছ কাটা শুরু করেন গাছিরা। রসের জন্য গাছের সাদা সাল পরিষ্কার করে ছোট বড় মাটির হারি বেঁধে রাখেন তারা। পরদিন ভোর থেকেই সব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। যদিও এবার শীতের তীব্রতা কম থাকার কারণে রসের পরিমাণ কিছুটা কম। তবুও রস সংগ্রহের কাজ চলছে পুরোদমে।
চলনবিল তাড়াশের দিঘী সগুনার গ্রামের গাছি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে এভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। এসব রস দিয়ে পাটালি ও ঢিমা বা লালি গুড় তৈরি করি। চার মাসের জন্য গাছের মালিকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে রস সংগ্রহ করি। তবে ভেজালের ভিড়ে আসল খেজুরের গুড় পাওয়ায় যেন দায় হয়ে পড়েছে। বাজারে বেশিরভাগ চিনি মিশ্রিত খেজুরের গুড়। তিনি আরও বলেন, চলনবিল তাড়াশে খাঁটি গুড়ের সন্ধান মেলে কেবল গাছিদের কাছে।
গুড় ক্রেতা মো. আব্দুল কাদের বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও খাঁটি গুড় কেনার অর্ডার করেছি গাছির কাছে। খাঁটি গুড়ের গন্ধ ও স্বাদ অন্যরকম মজার এক অনুভূতি জাগায়।
গুড়ের স্বাদ ও গন্ধ নিতে শহর থেকে আসা শিক্ষক মো. আব্দুর রহিম বলেন, খেজুরের রস দিয়ে তৈরি পিঠা ও পায়েসের স্বাদ আলাদা। আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারে খেজুরের গুড়ের ব্যবহার অসীম।
এছাড়া চলনবিল এলাকার কিছু তরুণ ছেলে-মেয়ে গাছিদের কাছ থেকে খাঁটি গুড় সংগ্রহ করে তা অনলাইনে বিক্রি করছেন। এতে তারা যেমন লাভবান হচ্ছে, তেমনি গাছিরাও গুড় বিক্রি করে নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত করছেন।
রাশিদুল হাসান/এমবি