খাদ্য কর্মকর্তার অবহেলায় ধান সংগ্রহে ভাটা
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:০৫
ছবি : প্রতিনিধি
কুমিল্লায় খাদ্য কর্মকর্তার দায়িত্বের অবহেলার কারণে চলতি আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্য গুদামে একমুঠো ধানও জমা দেয়নি বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা। ফলে ধান সংগ্রহে ভাটা পড়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ কৃষকরা জানেন না কীভাবে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে হয়।
এমনকি সদর দক্ষিণ, লালমাই, মনোহরগঞ্জ, মেঘনা, তিতাসে খাদ্য গুদাম না থাকায় কেউ ধান ও চাল জমাও দিতে পারছেনা বলেও জানান কৃষকরা।
জানা গেছে, গত ১৭ নভেম্বর সারাদেশে একযোগে আমন ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন খাদ্য উপদেষ্টা। এ অভিযান শেষ হবে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। এখন পর্যন্ত এ কার্যক্রমে কুমিল্লার কৃষক ও মিলাররা সাড়া দেয়নি।
কুমিল্লা খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লায় চলতি মৌসুমে আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৮৩৪ টন। চাল সংগ্রহের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৩৬ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত মিলাররা চাল জমা দিয়েছেন ৫ হাজার টন। যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৫০ শতাংশ এবং ধান জমা পড়েনি একমুঠোও।
মিল মালিকরা বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে ৬০-৬৫ টাকার নিচে কোনো চাল নেই। অথচ স্থানীয় বাজারে একইভাবে সরকার প্রতি কেজি চালের মূল্য নির্ধারণ করেছে ৪৭ টাকা। অথচ সরকারি গুদামে চালের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ টাকা। অথচ স্থানীয় খোলা বাজারে ৬০/৬৫ টাকার নিচে কোনো চাল নেই। সে কারণে মিলাররা চাল জমা দিতে চাইছেন না।’
কৃষক ও মিলাররা জানিয়েছেন, ‘দামের পার্থক্যের সঙ্গে সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে অনেক ঝামেলা। যে কারণে বাইরে ব্যবসায়ীদের কাছে কৃষকরা ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। সরকারি নীতিমালা অনুসারে গুদামজাত করা ধানের আর্দ্রতা ১৪ শতাংশের বেশি হবে না।’
বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, বিভিন্ন উপজেলা খাদ্য বিভাগ চাল ক্রয়ের জন্য মিলারদের চাপ দিলেও ধান ক্রয়ের ব্যাপারে কোনো তৎপরতা নেই। এবার প্রতি কেজি ধানের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ টাকা। প্রতি কেজি চালের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ টাকা।
অন্যদিকে, উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বর্তমানে চিকন ধানের মূল্য প্রতি কেজি ৩৮ টাকা। প্রতি কেজি মোটা ধানের মূল্য ৩৫ টাকা। সরকারি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে স্থানীয় বাজারে প্রতি মণের মূল্য ২-৩ শত টাকা বেশি থাকায় খাদ্য গুদামে ধান জমা দেয়নি বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাজারে মূল্য বেশি হওয়াই কৃষকরা আমাদের গুদামে জমা দেয় না। যে ৫টি উপজেলায় খাদ্য গুদাম নেই ওইসব এলাকার খাদ্য গুদাম করতে আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। বাজেট পেলে করা হবে।’
সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ/এমআই