![বান্দরবানে পাহাড় কাটার মহোৎসব](https://www.bangladesherkhabor.net/uploads/news_photos/2025/01/11/Bangladesher-Khabor-MI-(4)-67824e0c1bfdc.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
বান্দরবান জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরদারির মধ্যেও জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সিন্ডিকেট চক্রগুলি প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে দিনের পর দিন পাহাড় কাটছে। এতে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে।
বান্দরবানের ভৌগোলিক অবস্থান বিশেষ কারণে এই জেলার বেশিরভাগ ভূমি পাহাড়ি। এখানে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়, বনাঞ্চল ও প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য।
তবে, বসতি গড়তে বা বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অজুহাতে স্থানীয়রা, কখনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, কখনো জলাশয় ভরাট, কখনো রাস্তা নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে অবৈধভাবে পাহাড় কাটছেন।
জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে বনরূপা, কালাঘাটা, ছিদ্দিকনগর, রূপনগর, ক্যাচিংঘাটা, বালাঘাটা, কালাঘাটা, লেমুঝিড়ি, সুয়ালক, টংকাবতীসহ অনেক স্থানে স্কেভেটরের মাধ্যমে পাহাড় কাটা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অবৈধ কাজ বন্ধে প্রশাসন তৎপর হলেও পাহাড় খেকো সিন্ডিকেটগুলো তাদের প্রভাব বিস্তার করে রাতের অন্ধকারে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে জলাশয় এবং কৃষি জমি ভরাট করার জন্য, প্রতি ট্রাকে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ কাজের জন্য পাহাড় মালিকরা সিন্ডিকেটদের কাছে পাহাড় কাটা কন্ট্রাক্ট দেন, বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা পেয়ে থাকেন।
বান্দরবান শহরের বনরূপা পাড়ার বাসিন্দা মো. করিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাড়ায় একাধিক পাহাড় কেটে সমতল বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আমরা অভিযোগ জানালেও কিছুই হচ্ছে না। তারা রাতের অন্ধকারে স্কেভেটরের মাধ্যমে পাহাড় কেটে সমতলে পরিণত করছে। আমাদের চলাচলের রাস্তা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই তারা প্রতিরাতে পাহাড় কাটছে। পরিবেশ অধিদপ্তর, সাংবাদিক, পুলিশসহ সবাইকে ম্যানেজ করে নাকি পাহাড় কাটছে তারা।’
এ বিষয়ে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিষ্ট মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘জেলা শহরের যেসব এলাকায় পাহাড় কাটছে সব জায়গায় আমরা পরিদর্শন করেছি। মূল সমস্যা হচ্ছে একদিকে আমাদের পর্যাপ্ত জনবল নেই, আমরা মাত্র দুইজন কর্মরত আছি। অন্যদিকে সিন্ডিকেটের সদস্যরা পাহাড় কাটার সাথে জড়িত তারা মূলত গভীর রাতে পাহাড় কাটে। যার কারণে আমরা সময় ঘটনাস্থলে যেতে পারি না, সকালে ঘটনাস্থলে গেলে কাউকে পাওয়া যায় না। ’
উল্লেখ্য, গত ১ বছরে জেলায় পাহাড় কাটার দায়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ৭২টি মামলাসহ অর্ধ কোটি টাকার অধিক জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
আতাউর রহমান সোহেল/এমআই