স্কুলের কমিটি নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৩১
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। রোববার (১২ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের নাদপাড়া বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় ১০টি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে পুরো এলাকা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, এডহক কমিটি গঠন নিয়ে কিছুদিন ধরে শৈলকুপা উপজেলা জামায়াতের আমির মতিউর রহমান ও বিএনপি নেতা নওশের আলীর মধ্যে বিরোধ চলছিল। জামায়াত নেতা মতিউর রহমান ও বিএনপি নেতা নওশের আলীর মেয়ে নুরজাহান দুজনই কমিটির আহ্বায়ক হওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। রোববার সকালে শৈলকুপা উপজেলার নাদপাড়া যুব মিলন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এডহক কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা চলছিল। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি হাতাহাতি ও সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন, সেকেন্দার, আলীম, শাওন, সাহেব, বাচ্চু, ওমর ফারুক, আনোয়ার, তানভীর, মাসুদ রানা, রবিউল, রফিকুল, শাহিদুল, আমদ আলি, মান্নান, রবি, সামসুদ্দিন, আলমগীর, আরাফাত, ফয়েজ, রোজদার, সাদ্দাম হোসেন, মনিরুল, মিরাজ, রাকিবুল, রিপন, সুরুজ, সোহেল, রবি, রুদ্র, শাহীন, কলিমুদ্দিন, মেহেদী, রতন, মহিরুদ্দিনসহ অনেকেই।
সংঘর্ষের সময় বেশ কিছু বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। প্রায় ১০টি বাড়ি ও দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সোনিয়া আক্তার মুক্তা জানান, বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৩০ জন আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। বেশ কয়েকজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির নেতা নওশের আলী অভিযোগ করেন, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান তাদের সমর্থকদের মারধর করেছেন। তার দাবি, যখন এডহক কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল, তখন মতিউর রহমান নিজে লোকজন নিয়ে এসে তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালান।
অন্যদিকে, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান জানান, তারা সেখানে যাওয়ার পরই বিএনপির সমর্থকরা তাদের মারধর করেন। তিনি বলেন, ‘আমারও ১৫-২০ জন সমর্থক আহত হয়েছেন।’
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, ‘ঘটনার খবর পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় আবারও সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
এলাকার পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে শীঘ্রই পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই ধরনের ঘটনা এড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
এম বুরহান উদ্দিন/এমজে