সেতু নির্মাণ বন্ধ : ভোগান্তিতে দুই উপজেলার মানুষ

শাহরিয়ার শাকির
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:০৪

ছবি : বাংলাদেশের খবর
শেরপুরের ঝিনাইগাতীর সোমেশ্বরী নদীতে সেতু নির্মাণকাজ ছয় মাস ধরে বন্ধ থাকায় দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। নির্ধারিত সময় পার হলেও সেতুর নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০২২ সালে ৩ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ধানশাইল ইউনিয়ন থেকে শ্রীবরদী উপজেলায় সংযোগকারী ২০ মিটার দীর্ঘ একটি আরসিসি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। দরপত্রের মাধ্যমে শেরপুরের ধ্রুব টেডার্সকে কাজটি দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল কাজ শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ ধীরগতিতে চলার পর গত বছরের আগস্টে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে দেয়।
ডাইভারশন ভেঙে ভোগান্তি আরও চরমে
সেতুর পাশ দিয়ে সাময়িকভাবে পথচারীদের যাতায়াতের জন্য একটি ডাইভারশন তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু পাহাড়ি ঢলে তা ভেঙে যাওয়ায় পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা নিজেরাই একটি টিনের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে নদী পারাপার করছেন। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা।
স্থানীয়দের বক্তব্য
ভুক্তভোগী আমির আলী বলেন, ‘হাসিনা সরকার যাওয়ার পর থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ ফেলে চলে গেছে। এই সেতু না থাকায় আমাদের জীবন অসহনীয় হয়ে উঠেছে।’
রোগী পরিবহনে সমস্যার কথা উল্লেখ করে নিরব মিয়া বলেন, ‘রোগী নিয়ে ১০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। কী যে অশান্তির মধ্যে আছি, তা বোঝানোর ভাষা নেই।’
অটোচালক রশিদ বলেন, ‘আগে যাত্রী নিয়ে ৮-১২ টাকা আয় করতাম। এখন যাত্রী মাঝপথে নেমে যায়, আমাদের আয়ও কমে গেছে।’
চেয়ারম্যানের প্রতিক্রিয়া
ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের পর থেকে ঠিকাদারকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। একটি সেতুর অভাবে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু কাজ দ্রুত শুরুর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।’
প্রকৌশল দপ্তরের বক্তব্য
শেরপুরের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সেতুটি সাপোর্টিং রোলার ব্রিজ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে। ঠিকাদারকে কাজ শেষ করার জন্য ২৮ দিনের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু না হলে তার চুক্তি বাতিল করে নতুন করে টেন্ডারের মাধ্যমে বাকি কাজ শেষ করা হবে।’
এটিআর/