Logo

সারাদেশ

মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত আরিফার

Icon

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৪৮

মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত আরিফার

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী মেয়ে আরিফা আক্তার বরিশাল মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। তবে মেডিকেল কলেজে ভর্তির খরচ নিয়ে গভীর চিন্তায় রয়েছেন। 

ভ্যানচালক বাবা ও দর্জি কাজ করা মায়ের সংগ্রামী জীবন তার শিক্ষার পথে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য সহৃদয় মানুষের সহযোগিতার আশায় রয়েছে এই মেধাবী শিক্ষার্থী।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) প্রকাশিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় আরিফা আক্তার মেধা তালিকায় ১৯৭১তম হয়েছেন। তার স্কোর ছিল ১৭৮। সে বরিশাল মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া আরিফা আক্তার বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের  প্রতাপপুর গ্রামের শেখ আসাদুজ্জামান ও হামিমা আক্তার হিমা দম্পতির বড় মেয়ে। 

আরিফার বাবা পেশায় একজন ভ্যানচালক। মা হামিমা আক্তার হিমা গৃহিণী হলেও, মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসারে স্বচ্ছলতার জন্য নিজের কাজ সেরে যতটুকু সময় পান দর্জি কাজ করেন। মেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে ৬ বছর আগে দুই মেয়েকে নিয়ে প্রতাপপুর গ্রাম ছেড়ে বাগেরহাট শহরের আমলাপাড়া এলাকায় একটি টিনশেড বাড়িতে বসবাস করেন। ছোট্ট দুটি কক্ষে অনেক কষ্ট করে বসবাস করেন তারা। মেয়ে মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় অনেক ‍খুশি হলেও, হামিমা আক্তার হিমার কপালে চিন্তার ভাজ ভর্তি ও পড়াশুনার ব্যয় নিয়ে।

আরিফার মা বলেন, ওর বাবা ভ্যান চালিয়ে আর কত টাকা পায়, ‘খুবই কষ্টে দিন যায় আমাদের। দুই মেয়ের পড়াশুনার জন্য অনেক কষ্ট করে শহরে থাকি। এইচএসসি পরীক্ষার পরে মেয়েকে কোচিংয়ে দেওয়ার জন্য আমার সামান্য সোনার গহনা বন্ধক রেখে টাকা দিয়েছিলাম। পরে গ্রামীণ ব্যাংকসহ তিনটি এনজিও থেকে প্রায় দেড় লাখের বেশি টাকা ঋণ করেছি। আর কয়দিন পরেই মেয়ের ভর্তি, কীভাবে ভর্তির টাকা জোগাড় করব, আর ভর্তির পরে কীভাবে ওর লেখাপড়া চলবে এটা নিয়ে খুবই চিন্তায় রয়েছি।’

ভ্যানচালক বাবা আছাদুজ্জামান শেখ বলেন, ‘আমি লেখাপড়া জানি না, নিজের নামও লিখতে পারি না। জীবনে একটাই চাওয়া ছিল আমার সন্তানরা শিক্ষিত ও ভালো মানুষ হোক। ছোট বেলা থেকেই সে মেধাবী ছিল। মেয়েকে মেডিকেলে ভর্তি করানোর মতো অর্থ নেই। শুনেছি মেডিকেলে পড়তে অনেক টাকার প্রয়োজন। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন অসহায় এই বাবা।’

বরিশাল মেডিকেলে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থী আরিফা আক্তার বলেন, ‘ভর্তি নিয়ে মা-বাবাসহ পরিবারের সবাই চিন্তিত। আমিও বেশ চিন্তায় আছি, কীভাবে ভর্তি হব, কীভাবে পড়াশুনা চলবে। এতদিনের সব কষ্ট কি বিফলে যাবে? ভর্তির জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন মেধাবী এই শিক্ষার্থী।’

আরিফার ভর্তির বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান।

তিনি বলেন, ‘ভর্তির নির্ধারিত সময়ের আগেই তার ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে। আরিফার মত কোন দরিদ্র পরিবারের মেধাবী সন্তানরা যদি মেডিকেল, বুয়েটসহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলে, তাদেরকেও সহযোগিতা করা হবে।’

শেখ আবু তালেব/এমআই

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর