Logo

সারাদেশ

লাভের লোভে বিষবৃক্ষের চাষ

Icon

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩৪

লাভের লোভে বিষবৃক্ষের চাষ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ঝিনাইদহে বিষবৃক্ষের (তামাক) চাষ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে, কারণে ধানসহ অন্যান্য ফসলের চাষ কমে যাচ্ছে। বেশি লাভের প্রলোভনে কৃষকরা ঝুকছেন এই বিষবৃক্ষ চাষে। এতে পেঁয়াজসহ অন্যান্য ফসলের চাষে সারের সংকট দেখা দিয়েছে।

জেলার শৈলকূপা ও হরিণাকুণ্ডুতে পেঁয়াজ ও অন্যান্য ফসল চাষিরা সারের অভাবের কথা জানিয়েছেন। তামাক চাষে কৃষকদের অগ্রিম টাকা, সার ও প্রলোভন দেওয়ার কারণে তারা অন্য ফসলের চেয়ে তামাক চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।

গত ৪ বছরে জেলায় তামাক চাষ প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকোর তামাক ক্রয় কেন্দ্র থাকার কারণে একটি নিশ্চিত বাজার তৈরি হয়েছে, যা কৃষকদের আকৃষ্ট করছে। কিন্তু, সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সঠিক প্রয়োগ ও মনিটরিংয়ের অভাবে কৃষকরা তামাক চাষে ঝুঁকছেন।

ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৬০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিল, ২০২২-২৩ সালে তা বেড়ে ২৫১ হেক্টরে পৌঁছায়। ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তামাক চাষ যথাক্রমে ১৯৩ হেক্টর এবং ২২৪ হেক্টর জমিতে হয়েছে। হরিণাকুণ্ডু, শৈলকূপা, সদর ও মহেশপুরে সবচেয়ে বেশি তামাক চাষ হচ্ছে।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরীফ মোহাম্মদ তিতুমীর বলেন, ‘চাষিরা তামাক বাজারজাতকারী কোম্পানির কাছ থেকে অগ্রিম আর্থিক সহায়তা পেয়ে তামাক চাষে ঝুঁকছেন। এতে করে অন্যান্য ফসলের চাষে সারের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।’

জেলার কৃষকরা জানান, ‘তামাক চাষের ক্ষেত্রে একটি নিশ্চিত লাভ রয়েছে। উদয়পুর গ্রামের কৃষক বিপ্লব বলেন, তামাক চাষ করলে প্রতি বিঘায় ২০-৩০ হাজার টাকা লাভ হয়, যা অন্য ফসলের তুলনায় অনেক বেশি। গতবছর তার ১০ বিঘা জমিতে তামাক চাষ ছিল, এবছরও ১০ বিঘা জমিতে তামাক চাষ করছেন।’

বড়-ভাদড়া গ্রামের কৃষক লিটন মোল্লা বলেন, ‘তামাক চাষিরা নগদ টাকা দিয়ে সার কিনে থাকেন, যার কারণে তাদের জন্য সারের সংকট তৈরি হচ্ছে।’

পদ্মা সমাজ কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘তামাক চাষের জন্য কৃষকদের অগ্রিম টাকা প্রদান করা হয়, কিন্তু অন্যান্য ফসল চাষের ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন। সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সঠিক প্রয়োগ ও মনিটরিং করলে তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, ‘কৃষকদের বিকল্প ফসল চাষে উৎসাহিত করছি। সরকার তামাক চাষ নিষিদ্ধ না করলেও কৃষকদের বিকল্প চাষে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আগামীতে তামাক চাষ এই জেলায় কমবে।’

এম বুরহান উদ্দীন/এমআই

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর