বরাদ্দের স্থান পরিবর্তন করে যুবদল নেতার শ্বশুরবাড়িতে রাস্তা নির্মাণ
চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:১৯
চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালিয়া গ্রামে উপজেলার উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দের রাস্তা নির্দিষ্ট স্থানে না করে ইউনিয়ন যুবদল সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের শ্বশুরবাড়িতে নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে কালাম ছৈয়ালের বাড়ির জন্য রাস্তা নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়।
কিন্তু গত দুই সপ্তাহ পূর্বে ওই রাস্তা নির্মাণ হয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দক্ষিণ বালিয়া গাজীবাড়ীতে প্রবেশ পথটি নির্মাণকাজ সম্পন্ন পাওয়া যায়। সিসি ঢালাই দিয়ে নির্মাণ হয় খাজা আহম্মদ গাজীবাড়ীর সামনে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই রাস্তা। এটির জন্য বরাদ্দ ২ লাখ টাকা। একই অর্থবছরে ওই ইউনিয়নে গাইড ওয়ালসহ ৬টি রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয়। এই ৬টি কাজের জন্য বরাদ্দ হয় সাড়ে ১২ লাখ টাকা।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সাথে আলাপ করে জানা গেছে, শেখ হাসিনার পতনের পর ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারীসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যায় এবং কেউ কেউ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে।
ওই অর্থ বছরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বরাদ্দ নেওয়া কাজগুলো গত ৫ আগস্টের পর হাতবদল হয়ে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। রাজনৈতিক প্রভাবে উন্নয়নমূলক এইসব কাজ বাস্তবায়নে খুবই বেকায়দায় রয়েছেন বলে উপজেলার প্রশাসনিক কমকর্তারা জানিয়েছেন।
রাস্তার জন্য নির্ধারিত বরাদ্দ পাওয়া ৭ নম্বর ওয়ার্ড কালাম সৈয়াল বাড়ীর রুবেল সৈয়াল জানান, তাদের বাড়ির জন্য এই রাস্তা বরাদ্দ হয়েছে বিষয়টি জানেন না। যার নামে হয়েছে তিনি ঢাকায় থাকেন। গত অর্থবছরে এই বরাদ্দ হয়। তবে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ওই বরাদ্দের রাস্তা তার শ্বশুরবাড়িতে নির্মাণ করেছেন।
ওই রাস্তার ছবি তুলতে গেলে যুবদল নেতার শ্বশুর খাজা আহম্মদ গাজী জানান, রাস্তার নামফলক লেখা ভুল হয়েছে। কাজটি ওনার জামাতা দেলোয়ার করেছেন।
সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন যুবদল নেতা দেলোয়ার। তিনি বলেন, ‘আমি এই কাজের এখনো বিল পাইনি। আমার টাকা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করেছি। আমাদের ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি বলেছেন নামফলক সরিয়ে নিতে।’
কেন অন্য ওয়ার্ডের কাজ এখানে করা হয়েছে- এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি দেলোয়ার।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, ‘এই ধরনের কাজের মান যাচাই ও সঠিক নিয়মে করা হলে উপজেলা প্রকৌশলী আমাকে লিখিত দেবেন। কেউ যদি অনিয়ম করে থাকে তাহলে ওই কাজের বিল দেওয়া হবে না। কাজটির বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
আলআমিন ভূঁইয়া/এমজে