শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত
নীলফামারীতে ‘মৃদু বৃষ্টির মতো’ ঝরছে কুয়াশা, সূর্যের দেখা নেই

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:৩২
-67a07111833fa.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত উত্তরের জনপদ নীলফামারীর সীমান্তবর্তী উপজেলা ডিমলার জনজীবন। ঘন কুয়াশা যেন মৃদু বৃষ্টির মতো ঝরছে। ঠান্ডা হাওয়ায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। দিনের বেলাতেও সূর্যের দেখা নেই। টানা কয়েকদিন ধরে ক্রমশ কমছে রাত ও দিনের তাপমাত্রা। প্রতিনিয়তই হচ্ছে তাপমাত্রার ছন্দপতন।
উপজেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) একই সময় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জানা গেছে, সীমান্তবর্তী তিস্তা নদীবেষ্টিত এ উপজেলায় মাঘ মাসের শুরু থেকে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বয়ো-বৃদ্ধ মানুষজন নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করছেন।
সড়কপথে লোক চলাচল একেবারেই সীমিত। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের খেটে-খাওয়া মানুষজন। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন তিস্তা নদীর চরাঞ্চলের মানুষজন। হাড়কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দুর্ভোগ বেড়েছে দিনমজুর, শিশু, বয়স্ক ও ছিন্নমূল মানুষের।
এদিকে উপজেলা সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের চাপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যাদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি।
টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নের চর খরিবাড়ি গ্রামের দিনমজুর পলাশ ভাটিয়া বলেন, ‘পরিবার নিয়ে এই শীতে কষ্টে আছি। ইউনিয়ন পরিষদ গিয়েছিলাম কম্বলের জন্য। চেয়ারম্যান বলেছে কম্বল নেই। যা পেয়েছিলাম সেইগুলোর বিতরণ শেষ হয়ে গেছে।’
গয়াবাড়ি ইউনিয়নের ফুটানির হাট এলাকার অটোভ্যান চালক জুলহাস বলেন, ‘যতই শীত আর কুয়াশা আসুক, পেটের তাগিদে আমাদের ভ্যানগাড়ি নিয়ে বের হতে হয়। ঠান্ডায় মানুষ বের হচ্ছে না, তাই যাত্রী পাচ্ছি না।’
ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘শীতজনিত রোগে বহির্বিভাগে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিকিৎসা প্রদান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পাশাপাশি শিশু ও বৃদ্ধ রোগীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া বলেন, ‘এই শীতে উপজেলায় ছিন্নমূল, অসহায়, দুস্থ ও এতিমখানার শিশুদের মাঝে ৬ হাজারের ঊর্ধ্বে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আরও চাহিদা পাঠানো হয়েছে।’
আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল সবুর বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে আগামীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।’
রাসেদ খান/এমজে