গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সারা রাত সাঁজোয়া যানসহ থানার চারপাশে অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনী থানার সামনে মোতায়েন রয়েছে। হামলার ঘটনায় টুঙ্গিপাড়া থানার ওসিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। হামলাকারী সকলেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক বলে জানা গেছে । এ ঘটনায় একজনে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বঙ্গবন্ধু সমাধির পাশে খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দলীয় কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ করছিলেন। এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লিফলেট বিতরণ করা বন্ধ করতে গেলে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এ সময় পুলিশের কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় মুদি দোকানি সাফায়েত হোসেনকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন মসজিদের মাইকে ডাক দিয়ে পুলিশের গাড়ি আটকে ভাঙচুর ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে তাদের উপর হামলা চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা।

খবর পেয়ে থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে তারাও তোপের মুখে পরেন। পরে ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তা দিতে বেশ কয়েকটি সাঁজোয়া যান নিয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে সারারাত অবস্থান করছে সেনাবাহিনী।

এছাড়াও টুঙ্গিপাড়া থানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় টুঙ্গিপাড়া থানার উপপরিদর্শক রাব্বি মুরসালিন বাদী হয়ে ৪৭৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত নামা ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মঈনুল হোসেন জানান, মসজিদের মাইকে ঘোষণা শুনে ছুটে গিয়ে দেখি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে ফেলে রাখা হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে সেখানে পৌঁছে আমি সেই পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে ওসির কাছে বুঝিয়ে দেই। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কি কারণে ঘটনার সূত্রপাত তা আমার জানা নেই।

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম বলেন, আমাদের থানাসহ সকল পুলিশ সদস্য নিরাপত্তাজনিত কারণে সাঁজোয়া যানসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা থানার চারপাশে অবস্থান করছেন। হামলায় আমিসহ বেশ কয়েকজনকে আহত করা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

পলাশ সিকদার/এমবি