
ছবি : বাংলাদেশের খবর
দেশে নতুন এক শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছে স্যাভয় ক্যাবেজ। এটি বাঁধাকপির একটি বিশেষ জাত। এ সবজির পাতাগুলো মচমচে ও ভিন্ন ধরনের। এটি রান্না ও কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায়। স্যাভয় ক্যাবেজ ফাস্ট ফুড, বার্গার, স্যান্ডউইচের সঙ্গে খাওয়ার জন্যও উপযুক্ত। এটি খুবই পুষ্টিকর ও নানা স্বাস্থ্য উপকারিতায় ভরপুর।
উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদ জানান, স্যাভয় ক্যাবেজে আইসোথায়োসায়ানাইড থাকে, যা ফুসফুসের ক্যান্সার ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে সাহায্য করে।
তিনি আরও বলেন, এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফলেট এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ কমাতে সহায়ক। বাচ্চাদের মস্তিষ্ক গঠনেও সাহায্য করে এ সবজি।
এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ন্যাচারাল অ্যান্টিহিস্টামিনও রয়েছে, যা অ্যালার্জি প্রতিরোধে সহায়তা করে। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যও এটি সহায়ক এবং ওজন কমাতে সাহায্যকারী ওয়েটলস ড্রিংকস হিসেবেও খাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক বলেন, স্যাভয় ক্যাবেজে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। এতে ভিটামিন এ এর অন্যতম উৎস। সাধারণত সবুজ শাকসবজিতে বিটা ক্যারোটিন থাকে। কিন্তু স্যাভয় ক্যাবেজে এর পরিমাণ অনেক বেশি।
তিনি বলেন, জৈব মালচিং পদ্ধতিতে আমরা এ স্যাভয় ক্যাবেজ চাষ করেছি। এটি ইংল্যান্ড থেকে নিয়ে এসেছি। কিন্তু এর নামটি এসেছে ফ্রান্সের একটি জায়গার নাম থেকে। ইতালিতে একে মিলান ক্যাবেজ বলা হয়।
স্যাভয় ক্যাবেজের মাথার ওজন দেড় থেকে দুই কেজি হয়। পাতাসহ এর ওজন প্রায় তিন কেজি হতে পারে। চাষাবাদ পদ্ধতি অন্য বাঁধাকপির মতোই। তবে এর ফলন সাধারণ বাঁধাকপির তুলনায় বেশি। ২৫ দিনের চারা চাষের পর দুই মাসের মধ্যে এটি প্রস্তুত হয়। এছাড়া এর পাতা পশু খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
তিনি আরও জানান, পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ নতুন সবজিটি কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে, যা তার গবেষণার মূল উদ্দেশ্য।
অধ্যাপক হারুনের এ গবেষণা দলে সহযোগী হিসেবে যুক্ত রয়েছেন মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সাদিয়া রহমান মাইশা।
আশিকুজ্জামান/এমবি