ঘোড়া জবাইয়ের পর মাংস নিয়ে চামড়া ফেলে গেল দুর্বৃত্তরা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৩৭
-67b1cdfec64bd.jpg)
ঝিনাইদহের সদর উপজেলায় একটি স্কুল মাঠে ঘোড়া জবাই করে চামড়া ফেলে রেখে মাংস নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে উপজেলার হাটগোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। রোববার সকালে স্থানীয়দের নজরে আসে বিষয়টি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে হাটগোপালপুর বাজার। বাজারে পাঁচ-ছয় মাস ধরে ঘুরে বেড়ায় একটি ঘোড়া। বেশিরভাগ সময় হাটগোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় ঘোড়াটিকে। স্কুল মাঠে জন্মানো ঘাস খেয়ে জীবন কাটত ঘোড়াটির। গতকাল শনিবার রাতের যে কোনো সময় ওই ঘোড়াটিকে জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। আর চামড়া, মাথা ও ভুঁড়ি স্কুল মাঠে ফেলে রেখে যায়। অনেকে ধারণা করছেন, ঘোড়াটি জবাই করে মাংস নিয়ে বিক্রির উদ্দেশে কেউ নিয়ে যেতে পারে।
হাটগোপালপুর বাজারের ব্যবসায়ী রইচ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের আশপাশে অন্ধ ঘোড়াটি ঘোরাঘুরি করত। ঘোড়াটি কার আমরা কেউ জানি না। ঘোড়াটি অন্ধ হওয়ায় আমরা স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও মাঝেমধ্যে তাকে খাবার খেতে দিতাম। রোববার সকালে বাজারে এসে ঘোড়াটি কোথাও দেখতে পাইনি। পরে স্কুলমাঠে ঘোড়ার মাথা, চামড়া ও ভুঁড়ি পড়ে থাকতে দেখি। ধারণা করছি, রাতের অন্ধকারে ঘোড়াটি কেউ জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের হাটে সেই মাংস অন্যান্য মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করা হবে না, এর কোনো নিশ্চয়তাও দেখছি না।
রিফাত নামের স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ঘোড়াটি অন্ধ হলেও আমাদের কাছে অনেক প্রিয় ছিল। বেশিরভাগ সময় স্কুলমাঠেই থাকত। আমরা ঘোড়াটিকে প্রতিদিন খাবার খেতে দিতাম, দেখাশোনা করতাম। কিন্তু কে বা কারা তাকে জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে। আর তার অবশিষ্ট অংশ মাঠে ফেলে রেখে গেছে।
তিনি বলেন, এটা দেখে আমাদের খুব কষ্ট লাগছে। কীভাবে পারল ঘোড়াটি জবাই করে এভাবে মাংস নিয়ে যেতে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। ঘোড়ার মাংস মানুষের খাওয়ার উপযোগী না।
তিনি বলেন, ঘোড়ার মাংসে মাত্রাতিরিক্ত অ্যাসিড থাকে। ফলে ঘোড়ার মাংস খেলে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। বাজারে এমন মাংস বিক্রির শঙ্কা তৈরি হলে আমরা প্রয়োজনে মাংস পরীক্ষা করতে পারি।
স্থানীয় হাটগোপালপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সাত্তার বলেন, অন্ধ ঘোড়াটির এই পরিণতি ও ঘোড়ার মাংস বিক্রির আশঙ্কায় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এম বুরহান উদ্দীন/বিএইচ