১৯ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৪৩
-67b731816a791.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
কক্সবাজারের টেকনাফে ফেরার পথে নাফ নদ থেকে মাছ ধরার চারটি ট্রলারসহ ১৯ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, ঘোলারচর ও নাফ নদের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি নাফ নদের মোহনা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া চার বাংলাদেশি জেলেকে এখনও তাদের ছাড়েনি আরাকান আর্মি।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে টেকনাফ জালিয়াপাড়ার বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দু গণি বলেন, টেকনাফের ফেরার পথে আজকেও আমাদের ঘাটের মাছ ধরার দুটি ট্রলারসহ ৯ জন মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি। এর আগে ধরে নিয়ে যাওয়া ৬ জেলেকে এখনো ছেড়ে দেয়নি। তার ওপর এ ধরনের ঘটনা মাছ ব্যবসায়ীসহ জেলেদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাছাড়া এটি সমাধানে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি আমরা।
এছাড়া শাহপরীর দ্বীপ মাঝপাড়া দুটি নৌকাসহ ১০ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন শাহপরীর দ্বীপ মাঝারপাড়া নৌঘাটে সাধারণ সম্পাদক আবদুর গফুর।
তিনি বলেন, তার ঘাটের দুটি নৌকার মো. কালাইয়া ও জাফর আলমের মালিকাধীন নৌকা নিয়ে ১০ মাঝিমাল্লা নাফ নদে মাছ শিকারে যায়। এ সময় মিয়ানমারের আরাকান আর্মির সদস্যরা জেলেদের ধাওয়া করে তাদের ধরে নিয়ে যায়। এতে জেলেদের পরিবারের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফ সীমান্তের বিজিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘নাফ নদী থেকে ট্রলারসহ জেলেদের নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি। পাশাপাশি তাদের দ্রুত ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।’
এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক জানিয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি এইমাত্র শুনেছি। এ ঘটনায় বিজিবির সাথে আলোচনা করে তাদের ফেরত আনার চেষ্টা চালানো হবে।’
স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী মো. বশির আহমেদ বলেন, ‘প্রায় সময় জেলেদের মিয়ানমারে ধরে নিয়ে ঘটনা ঘটছে। এতে আমরা খুব চিন্তিত। কেননা এটি সমাধান না হলে জেলেরা মাছ শিকারে যাবে না। তাই এটি সমাধান না হলের জেলেদের মাঝে আবারও হতাশা দেখা যাবে।’
এর আগে গত বছর ৬ অক্টোবর সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট থেকে ছয়টি মাছ ধরার ট্রলারসহ ৫৮ জেলে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যান। তাদের ৯ অক্টোবর অপহরণ করে সে দেশের নৌবাহিনী। এ সময় মিয়ানমার নৌবাহিনীর টহলরত একটি স্পিড বোট থেকে বাংলাদেশি একটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তাতে তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজন ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে জেলেদের ফেরত দেওয়া হয়। তখন এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। এছাড়া সব শেষ ১৫ অক্টোবর মিয়ানমারের রাখাইনে অনুপ্রবেশ করা মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা বাংলাদেশি ১৬ জেলেকে ফেরত এনেছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
ইব্রাহীম মাহমুদ/এমআই