
ঋষভ পন্থের ক্রিকেটীয় প্রতিভা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তার মানসিকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আগ্রাসী ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবার। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে উইকেট হারানোর প্রবণতা এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং না করার অভ্যাস তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবারের আইপিএল (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ) পন্থের ক্রিকেটীয় জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে। এটি তার জন্য সঞ্জীবনী হয়ে উঠতে পারে, যদি তিনি নিজের মানসিকতা এবং খেলার ধাঁচে ভারসাম্য আনতে পারেন।
গত বছর একটি সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন পন্থ। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে তাকে দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের সহায়তায় তিনি আবার মাঠে ফিরেছেন। কিন্তু ২২ গজে আগের অবস্থানে ফিরে যেতে তার প্রয়োজন পরিমিত আগ্রাসী মানসিকতা। এ বারের আইপিএল সেই সুযোগ এনে দিতে পারে।
পন্থের ক্রিকেটীয় দক্ষতা প্রশ্নাতীত। তিনি দক্ষ উইকেটরক্ষক ও আগ্রাসী ব্যাটার। তবে তার আগ্রাসী মানসিকতা অনেক সময়ই দলের জন্য সমস্যা তৈরি করেছে। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে উইকেট হারানোর প্রবণতা এবং পিচে থিতু হয়ে যাওয়ার পরও ভুল শট নির্বাচনের জন্য তিনি সমালোচিত হয়েছেন। গত বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতেও তার দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের তীব্র সমালোচনা হয়েছিল। কোচ গৌতম গম্ভীর ও অধিনায়করা বারবার তাকে সতর্ক করলেও পন্থ নিজের খেলার ধাঁচে পরিবর্তন আনেননি।
এবারের আইপিএল পন্থের জন্য একটি বড় পরীক্ষা। লখনউ সুপার জায়ান্টস তাকে ২৭ কোটি টাকায় কিনেছে, যা আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ডিল। দলের মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা এবং কোচ গৌতম গম্ভীর আস্থা অর্জন করা পন্থের জন্য সহজ কাজ হবে না। গত মওসুমে গোয়েঙ্কা মাঠে প্রকাশ্যে রাহুলকে ভর্ৎসনা করেছিলেন, যা ক্রিকেট মহলে আলোড়ন তুলেছিল। পন্থকে শুধু নিজের পারফরম্যান্সের চাপই নয়, দলের পারফরম্যান্সের চাপও সামলাতে হবে।
পন্থের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে নিজের মানসিকতা বদলানো। আগ্রাসী ক্রিকেট সব সময় প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে না, বরং অনেক সময় নিজের দলকেও বিপদে ফেলে দেয়। পন্থকে পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং করতে হবে এবং অধিনায়ক হিসেবে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা দেখাতে হবে।
ভারতীয় দলে পন্থের জায়গা এখন আর সুরক্ষিত নয়। লোকেশ রাহুল, ঈশান কিশন, ধ্রুব জুরেল, জিতেশ শর্মা, সঞ্জু স্যামসনের মতো প্রতিভাবান উইকেটরক্ষক-ব্যাটাররা আছেন, যারা যেকোনো সময় পন্থের জায়গা দখল করতে পারেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পন্থকে প্রথম পছন্দের উইকেটরক্ষক হিসেবে না নেওয়ার সিদ্ধান্তই তা প্রমাণ করে। সূত্র : আনন্দবাজার
এমজে