Logo

সারাদেশ

‘মামলা বাণিজ্যের হোতা’ সিকদার লিটন গ্রেপ্তার

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৫, ১৭:৫০

‘মামলা বাণিজ্যের হোতা’ সিকদার লিটন গ্রেপ্তার

ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল সিকদার লিটনকে গ্রেপ্তার করেছে

প্রতারণা ও মামলা বাণিজ্যের হোতা হিসেবে অভিযুক্ত এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলার আসামি সিকদার লিটন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বুধবার (৫ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়েজ আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিকদার লিটন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চর আজমপুর গ্রামের সিদ্দিক সিকদারের ছেলে। তিনি ঢাকার কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সদস্য। সম্প্রতি তার বিকাশ হিসাব নম্বরে তিনমাসে সাড়ে ২২ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন। মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। 

রাজধানীর ভাটারা থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুলাই যমুনা ফিউচার পার্কের পাশে কুড়িল জোয়ার সাহারা কেন্দ্রীয় মসজিদের গলির মুখে পাকা রাস্তার ওপর গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মারা যান। ওই ঘটনায় শফিকুল ইসলাম নামে একজন মামলা করেন। আদালতের আদেশে ২৫ ফেব্রুয়ারি ভাটারা থানা পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে। সেই মামলায় সিকদার লিটন এজাহারনামীয় ২৭ নম্বর আসামি। 

আরও পড়ুন : ‘প্রতারক’ সিকদার লিটনের সঙ্গে তৃপ্তির কীসের সখ্য?

এছাড়া রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মোছা. নাদিরা নামে একজন বাদী হয়ে মামলা করেন। সেই মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী জনতাকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে জখম ও হুকুম প্রদানের অভিযোগ আনা হয়েছে সিকদার লিটনের বিরুদ্ধে। মামলার এজাহারে বলা হয়, ৪ আগস্ট দুপুরে মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজের কাছে রাস্তায় আন্দোলনকারী জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে গুরুতর জখম ও হুকুম প্রদানের অপরাধ করেছেন লিটন। 

২০২০ সালের এক মামলায় দীর্ঘ চারবছর কারাগারে ছিলেন সিকদার লিটন। এর আগেও বিভিন্ন অপরাধে কারাগারে থেকেছেন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জেল থেকে বেরিয়ে তিনি মামলা বাণিজ্যসহ নানা প্রতারণামূলক কাজ শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায়, মো. জাবেদ নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির খালাতো ভাই হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনি মামলা দায়ের করেন। ওই ঘটনায় নিহত জাবেদের ভাই মাইনুদ্দীন মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এতে বলা হয়, ৫ আগস্ট ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাবেদ গুলিবিদ্ধ হন। ১৩ আগস্ট তিনি ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 

মাইনুদ্দীন জিডিতে বলেন, এ বিষয়ে তারা কোনো মামলার পদক্ষেপ নেননি। অথচ, সিকদার লিটন নিজেকে জাবেদের খালাতো ভাই দাবি করে ঢাকার আদালতে একটি সিআর মামলার আবেদন করে বসে আছেন। সিকদার লিটনের সঙ্গে নিহত জাবেদের পরিবারের কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই। এমনকি তাকে কোথাও কোনো মামলার আবেদন করার অনুমতি, সম্মতি বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নিও দেওয়া হয়নি। তিনি মামলা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে এটি করে থাকতে পারেন। এ বিষয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।

আলফাডাঙ্গার এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছর শাসনামলে নিজেকে দলটির দাবি করা লিটন এখন বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন। তবে আওয়ামী লীগ আমলে তিনি ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে এলাকায় প্রচারণা চালিয়েছিলেন। ডজনখানেক জালিয়াতিক মামলার আসামি লিটন গ্রেপ্তার এড়াতে নিয়েছিলেন নানা কৌশল। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর