ছবি : বাংলাদেশের খবর
অনলাইনে চাকরির প্রলোভনে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চাইনিজ নাগরিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারকে করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে নয় লাখ ৪৩ হাজার টাকা, চার হাজার ডলার ও অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা, চারটি মোবাইলসহ কয়েকটি চেক বইয়ের পাতাও উদ্ধার করা হয়।
সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরখান ও গুলশান থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বাংলাদেশের খবরকে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মোর্শেদ আলম (৩৮), জামাল উদ্দিন (৪৩) ও চাইনিজ নাগরিক মি. কুকি (৩৫)।
ডিএমএপির ডিসি (মিডিয়া) জানান, নাহিদুল ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগীকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে প্রলোভন দেখিয়ে 'পলারস্টেপ সফটওয়্যার' এর মাধ্যমে অনলাইনে চাকরির জন্য প্রস্তাব দেয় চক্রটি। তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে পলারস্টেপ সফটওয়্যারে অনলাইনে কাজও শুরু করেন তিনি। কাজের শুরুতে তাকে ৮২০ টাকা কমিশন প্রদান করা হয়।
পরে বিভিন্ন অফারের প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের ‘আনাস এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি চলতি অ্যাকাউন্টে কয়েক দফায় চার লাখ ৪৩ হাজার ৩৭৭ টাকা নেয়। এরপর তাকে আর কোনো কমিশন না দিয়ে ফের তিন লাখ ১৯ হাজার ১৩০ টাকা দাবি করা হয়। এতে সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি উত্তরখান থানা পুলিশকে জানান ভুক্তভোগী।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আনাস এন্টারপ্রাইজের দোকানের মালিক মোর্শেদ আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
পুলিশকে তিনি জানান, জামাল উদ্দিন নামের একজনের সহযোগিতায় তার নিজ নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গত ২২ ডিসেম্বর প্রায় ৩২ লাখ টাকা আসে। যার মধ্যে ৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা মোর্শেদের নিজের এবং বাকি টাকা জামাল উদ্দিনের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়। পুলিশ তার কাছ থেকে নয় লাখ ৪৩ হাজার টাকা, দুটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন ও কিছু চেকের পাতা জব্দ করে।
তার দেওয়া তথ্যে, বাবুর্চি বাড়ির গফুর মুন্সী রোডের একটি বাসা থেকে জামালকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পুলিশ তার হেফাজত থেকে চার হাজার ডলারসহ কিছু বিদেশি মুদ্রা, দুটি মোবাইল ফোন ও ব্যাংকের চেকবইয়ের কিছু পাতা জব্দ করে।
জামালের দেওয়া তথ্যে গুলশানের অডজ টাওয়ারের নিচ থাকে চাইনিজ নাগরিক কুকিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, চীনে গিয়ে কুকির সঙ্গে পরিচয় হয় জামালের। কুকি জামালকে ব্যবসার প্রলোভন দেখান। সম্প্রতি উত্তরা রেস্টুরেন্টে কুকির সঙ্গে জামালের সাক্ষাৎ হয়। সেখানে কুকি জামালের কাছ থেকে কয়েকটি বিজনেস অ্যাকাউন্ট নম্বর চেয়ে নেন। এর বিনিময়ে কমিশন পাবেন বলে জানান কুকি।
পুলিশ আরও জানায়, কুকির প্রস্তাবে রাজি হয়ে মোর্শেদ আলমের আনাস এন্টারপ্রাইজের বিজনেস অ্যাকাউন্ট নম্বর কুকিকে দেন। গ্রেপ্তার কুকি বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
এদিকে ভুক্তভোগী নাহিদুল ইসলামের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার তিনজনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এমএম/এমবি/ওএফ