৫ দিন ধরে বুড়িমারী স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
![Icon](https://www.bangladesherkhabor.net/uploads/settings/ezgif-7-c58f72a6c2icon-2-1730277221.png)
মাল্টিমিডিয়া করেসপন্ডেন্ট, লালমনিরহাট
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:৪০
![৫ দিন ধরে বুড়িমারী স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ](https://www.bangladesherkhabor.net/uploads/news_photos/2025/02/05/Bangladesher-khabor-mustain-(96)-67a3866f88ff2.jpg)
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন। এরই জেরে গত পাঁচদিন ধরে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে কোনো রপ্তানি পণ্য নিচ্ছেন না। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় সরকারের প্রায় দুই কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে নির্মাণ কাজ (কনস্ট্রাকশন ওয়ার্ক) কমে যায়। এ সময় তোর্শা ও স্টোন বোল্ডার পাথরের বাজার মূল্য কমে যায়। ওই সময় প্রতিটন পাথর ১০-১২ ডলারে রপ্তানি করতো ভারত ও ভুটানের রপ্তানিকারকরা।
এ সময় বুড়িমারী স্থলবন্দরের পাথর আমদানিকারকরা ক্ষতির মুখে পড়লে গত ৪ নভেম্বর ভুটান ও ভারতের পাথর রপ্তানিকারকদের চিঠি দেয় বুড়িমারী স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন। চিঠিতে পাথরের রপ্তানি মূল্য প্রতি মেট্রিকটন ভারতের ৭ ডলার ও ভুটানের ১২ ডলারে নির্ধারণ করে পাঠাতে অনুরোধ করা হয়।
এ ব্যাপারে সে দেশের ব্যবসায়ীরা/রপ্তানিকারকরা কোনো উত্তর দেয়নি। পরবর্তীতে ভুটানের স্টোন বোল্ডার তোর্শা পাথর প্রতি মেট্রিকটন ১৫ ডলার ও সামসি স্টোন/পাথর ১৪ ডলার এবং ভারতের স্টোন/পাথর বোল্ডার ১০ ডলারে রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করে আবারও ওই দুই দেশের পাথর রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনকে চলতি বছরের ৪ ও ১৬ জানুয়ারি চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠির কপি ওই দুই দেশের হাইকমিশনেও দেওয়া হয়। এতেও কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি সে দেশের ব্যবসায়ীরা। সর্বশেষ গত ২১ জানুয়ারি আবারও চিঠি দেওয়া হয়। এতেও ভুটান ও ভারতের পাথর রপ্তানিকারকদের পাথরের মূল্য পুনর্নির্ধারণ না করলে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়।
এ ঘটনার জেরে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারকেরা বাংলাদেশের লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে কোনো পণ্য নিচ্ছেন না এবং পাঠাচ্ছেনও না।
এতে গত চার দিন ধরে বুড়িমারী স্থলবন্দর মহাসড়কে ভারতে রপ্তানির জন্য গার্মেন্ট বর্জ্য তুলা, সাবান, জুস, বিস্কুট ও পটেটো সামগ্রীর অনন্ত ৫০টি গাড়ি আটক রয়েছে। অপরদিকে ভারতের চ্যাংড়াবান্ধায় প্রায় ৫০০ ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে।
বুড়িমারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফারুক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এ এস এম নিয়াজ নাহিদ বলেন, ভারতীয় রপ্তানিকারকরা কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের না জানিয়ে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। বুড়িমারী বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে যেসব পণ্য ভারতে রপ্তানি করা হয় সেগুলো পণ্যও তারা নিচ্ছে না। চ্যাংড়াবান্ধা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন শুধু পচলশীল পণ্য কমলা রপ্তানি ছাড়া রোববার থেকে আর কোনো পণ্য রপ্তানি করছে না।
বুড়িমারী আমদানি রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু রাইয়ান আশয়ারী রছি বলেন, ভারত থেকে যে পাথর আসছে, সেগুলো আমরা ১০ ডলারে আমদানি করছি। এরপরও কোনো কারণ ছাড়াই কেন তারা সমস্ত পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিল তা বুঝে আসে না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভুটান থেকে লাইম স্টোন গার্মেন্টস ঝুটসহ অন্য সব পণ্য আসতো সেগুলো পণ্য ভারতীয় রপ্তানিকারকরা তাদের জিম্মি করে গায়ের জোরে বন্ধ করে দিয়েছে। এতে সীমান্তের ওপারে ভারতের চ্যাংড়াবান্ধায় প্রায় পাঁচ শতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে।
অন্যদিকে আমাদের রপ্তানি করা পণ্য ভারত না নেওয়ায় বুড়িমারী বন্দরের রাস্তায় প্রায় ৩০ থেকে ৫০টি পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকা পড়েছে। গত চার দিনে ভারত ও ভুটানের বোল্ডার পাথরসহ রোববার থেকে পচনশীল পণ্য ছাড়া আর কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশ না করায় গত পাঁচদিনে অন্তত দুই কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মাসউদুর রহমান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাহেবুল ইসলাম টিটুল/এমবি