
ছবি : সংগৃহীত
দ্য কিংডম অফ লেসোথো— পাহাড়ঘেরা পৃথিবীর একমাত্র স্বাধীন দেশ, যার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৫০০ ফুট। এই দেশে পৌঁছানোর জন্য ঘোড়া বা ব্যক্তিগত বিমান ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। তবে অবাক হবার কিছু নেই, লেসোথোর নিজস্ব এয়ারস্ট্রিপ রয়েছে। ব্যক্তিগত কাজে এটি ব্যবহার করেন তারা।
দেশটির সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো ঝর্নার পানি। স্থানীয়রা এটিকে ‘সাদা সোনা’ নামে অভিহিত করেন। পাহাড় থেকে নেমে আসা এই পানি এতই সুস্বাদু ও সুমিষ্ট যে, গোটা আফ্রিকাতে এটি রফতানি করা হয়।
চলুন জেনে নিই লেসোথোর আরও কিছু অবাক করা তথ্য—
আফ্রিকার উচ্চতম স্কি-রিসর্ট
বরফের পাহাড় কেটে স্কি বা স্নো-বোর্ডিংয়ের কথা ভাবলেই আমাদের মনে ইউরোপ বা আমেরিকার কথা মাথায় আসে। কিন্তু লেসোথো সেখানেও অনন্য। কারণ আফ্রিকার গুটিকয়েক স্কি-রিসর্টের মধ্যে উচ্চতম রিসোর্টটি রয়েছে এখানে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩২২২ মিটার উচ্চতায় এই মালোটি পাহাড় আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
বাসিন্দাদের আজব পোশাক
লেসোথোর বাসিন্দাদের ‘বাসোথো’ বলা হয়। তাদের ট্র্যাডিশনাল পোশাক হলো একটি বিশেষ চাদর বা শাল, যার গায়ে নানা ইতিহাস লেখা থাকে। সঙ্গে একটি বিশেষ টুপিও পরেন তারা। এটি তাদের জাতীয়বোধের প্রতীক।
প্রিন্স হ্যারির অনুদান
ব্রিটেনের মতোই লেসোথো-তে রাজা থাকলেও দেশ চালান নির্বাচনে জয়ী প্রধানমন্ত্রী। রাজপরিবার বংশপরম্পরায় দেশের সাংবিধানিক প্রধান। লেসোথোর যুবরাজ প্রিন্স সেইসো ব্রিটেনের প্রিন্স হ্যারির ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা দুজনে মিলে স্থানীয় ভাষায় ‘লেসোথো-এ ভুলবেন না’-নামে চ্যারিটি ফান্ড বানিয়েছেন। যা এই দেশে এইচআইভি আক্রান্তদের চিকিৎসায় খরচ হয়। ১৯ বছর বয়সে প্রথমবার সে দেশে যান প্রিন্স হ্যারি।
আমেরিকায় জিন্স রফতানি
সম্প্রতি আমেরিকাতে যত জিন্স ব্যবহৃত হয় তার একটা বড় অংশই আসে এই লেসোথো থেকে। লিভাইসসহ নামীদামি ব্র্যান্ডের জিন্স এখন তৈরি হয় আমেরিকার থেকে সহস্র মাইল দূরের এই দেশে।
আত্মহত্যার হার সর্বোচ্চ
লেসোথোতে প্রতি এক লাখ বাসিন্দার মধ্যে ৯০ জন আত্মহত্যা করেন, যা বিশ্ব গড়ের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ড্রাগ, মদ্যপান, চাকরির অভাব এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির ফল।
সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ
স্থানীয় লোকশ্রুতি অনুযায়ী লেসোথো-কে যে যে পাহাড় ঘিরে রয়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশই অভিশপ্ত। এখানে পা রাখলে অভিশাপ লাগতে পারে। তাই এই দেশে আমজনতার প্রবেশ নিষিদ্ধ। তবে মনে করা হয়, এই লোকশ্রুতি ছড়ানো হয়েছে এখানকার হীরের খনিকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে। পাথুরে জমির জন্য এখানে চাষবাস তেমন হয় না। চাকরি-বাকরিও নেই। তাই স্থানীয় যুবক-যুবতীরা কাজের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি দেন।
এটিআর/