ছবি : সংগৃহীত
একটু খেয়াল করে দেখলেই বুঝবেন যে আপনি আগের তুলনায় বর্তমানে ক্লান্তি, ব্যথা বা মানসিক চাপের মতো সমস্যা অনুভব করছেন। জয়েন্ট পেইনসহ ঘুমের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ৩০ থেকে ৪৫ জন কোনো না কোনো ধরনের ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন। আজ থেকে ২০ বছর আগেও কিন্তু এমন চিত্র দেখা যায় নি। তাহলে আগের তুলনায় এখন এই ধরনের রোগের সংখ্যা বাড়ছে কেন?
এর মূল কারণ হচ্ছে দূরত্ব। মাটি থেকে পায়ের দূরত্ব। এই দূরতের গুরুত্ব ধরতে পারলেই কিন্তু এসব সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারবেন। তার আগে একটু চিন্তা করে দেখুন কবে খালি পায়ে হেঁটেছেন? মনে করতে পারেন? মাটির সংস্পর্শ কিন্তু এই সমস্যাগুলো সহজেই কমাতে পারে। জানলে অবাক হবেন, ত্বক পরিচর্যা থেকে মানসিক চাপ দূর করা পর্যন্ত মাটির রয়েছে অসাধারণ ক্ষমতা। আজকের দ্রুতগতির জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহারে আমরা নিজের অজান্তেই শরীরে অনেক স্ট্যাটিক চার্জ জমা করি। যার ফলে ক্লান্তি, ব্যথা বা মানসিক চাপের মতো সমস্যা হয়। তবে মাটি কীভাবে আমাদের নেগেটিভ চার্জগুলো শোষণ করতে পারে? চলুন জেনে নিই।
একে আর্থ গ্রাউন্ডিং বলে। এর মানে হলো আপনার শরীরকে সরাসরি পৃথিবীর সাথে সংযুক্ত করা।
আর্থ গ্রাউন্ডিং কী?
আর্থ গ্রাউন্ডিং মানে হলো আপনার শরীরকে সরাসরি পৃথিবীর সাথে সংযুক্ত করা। যেমন খালি পায়ে হাঁটা, বসা, বা শোয়া। এতে শরীরের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ মাটির মাধ্যমে বের হয়ে যায় এবং শরীর ও মন শিথিল হয়।
কীভাবে গ্রাউন্ডিং করবেন?
- গ্রাউন্ডিং করার জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো খালি পায়ে মাটিতে হাঁটা।
- আপনি ঘাস, বালি, বা খোলা মাটির উপর হাঁটতে পারেন।
- আর ঘরের ভেতরে গ্রাউন্ডিং ম্যাট ব্যবহার করেও একই উপকার পেতে পারেন।
গ্রাউন্ডিংয়ের উপকারিতা
- গ্রাউন্ডিং শরীর ও মনকে উপকার করে বিভিন্নভাবে—
- প্রদাহ কমায় এবং ব্যথা উপশম করে।
- মানসিক চাপ কমিয়ে শান্তি আনে।
- গভীর এবং আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করে।
- শরীরের শক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করে।
ইসলামিক দৃষ্টিকোণ
আমরা যখন নামাজ আদায় করি তখনও কিন্তু আর্থ গ্রাউন্ডিং এর মত ঘটনা ঘটে। সেজদারত অবস্থায় মাথা মাটির সাথে সরাসরি শারীরিক সংযোগ, শরীরে জমে থাকা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক চার্জ বা ফ্রি র্যাডিক্যালস নির্গত করতে পারে। তাই সময়মতো নামাজ আদায়ের বিষয়ে সচেতন থাকা প্রত্যেক মুমিনের জন্য ফরজ। নামাজ আদায়ের বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নামাজ মুমিনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’ (সুরা নিসা, আয়াত, ১০৩)
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, গ্রাউন্ডিং শরীরের প্রদাহ এবং ক্লান্তি কমাতে সহায়তা করে।
তবে আরও গবেষণা প্রয়োজন, কিন্তু ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এই পদ্ধতির কার্যকারিতা সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা দেয়।
ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড (EMF) এবং গ্রাউন্ডিং
- আমাদের দৈনন্দিন ডিভাইসগুলো শরীরে অতিরিক্ত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড (EMF) তৈরি করে।
- গ্রাউন্ডিং করলে এই অতিরিক্ত চার্জ বের হয়ে যায়, যা শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে।
গ্রাউন্ডিংয়ের নিরাপত্তা
- গ্রাউন্ডিং সাধারণত নিরাপদ, তবে কিছুক্ষেত্রে সতর্ক থাকা জরুরি।
- যেমন, হার্টের যন্ত্র ব্যবহারকারীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এটি শুরু করুন।
- মাটির গ্রাউন্ডিং একটি সহজ ও প্রাকৃতিক উপায়, যা শরীর ও মনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
- সময় বের করে প্রকৃতির সংস্পর্শে আসুন, সুস্থ থাকুন।
টিএ/এসবি