টানা ৮/৯ ঘণ্টার স্বস্তির ঘুম শেষে সকালে উঠেই এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে। আর এই ভালোলাগাকে আরেক ধাপ বাড়াতে সবাই চায় মুখরোচক কোন খাবার দিয়ে সকাল শুরু করতে। সকালের নাস্তায় এই মুখরোচক খাবারই সাধারণত হজমে সমস্যা করে বা পেটে গ্যাস উৎপন্ন করে। হজম অথবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ছন্দপতন ঘটায়। তাই গ্যাস্ট্রিকের হাত থেকে বাঁচতে সকালের নাস্তায় কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
- সকাল সকাল ডাল জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ডাল জাতীয় খাবার যেমন বুট, মটরশুঁটি, ছোলা বা মসুর ডাল আমাদের পেটে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস তৈরি করে।
- অনেকেই আবার ডায়েট করে থাকেন। ডায়েটে সালাদ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এসব সালাদে বেশিরভাগ সময়েই কাঁচা সবজি ব্যবহার করা হয়। সবজি রান্না না করে কাঁচা খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে। তাছাড়া বাঁধাকপি, ব্রকোলি, ফুলকপিও কাঁচা না খাওয়াই ভালো। কিন্তু চাইলে সিদ্ধ করে খেতে পারেন।
- অনেকেই ঘুম থেকে দেরি করে উঠে স্কুল, কলেজ, অফিসে যায়। সকালের ব্যস্ততায় খাওয়ার সময় বের করতে পারে না। তখন রাস্তা থেকে ভাজা-পোড়া খাবার যেমন পরোটা, পুরি, শিঙাড়া বা চপ ইত্যাদি অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন। যা পেটে গ্যাস তৈরির মূল কারণ। সকালের নাস্তায় ভুলেও তেলে ভাজা খাবার খাওয়া যাবে না। তাই যতটা সম্ভব সকাল বেলা ভাজা-পোড়া এড়িয়ে চলুন। এ ধরনের খাবার হজমে সমস্যা তৈরি করে।
- ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। পিৎজা, বার্গার, প্যাকেটজাত স্ন্যাকস।এগুলো হজমে ধীরগতি আনে এবং পেটে গ্যাস তৈরি করে।
- দুধ অনেক স্বাস্থ্যকর হলেও দুধেও কিন্তু কারো কারো সমস্যা হয়ে থাকে। দুধে থাকে ল্যাক্টোজ। অনেকেই ল্যাক্টোজ সহ্য করতে পারেন না। যদি ল্যাক্টোজ সহ্য করতে সমস্যা হয়, তবে সকালে দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্য এড়িয়ে চলুন। একদম খালি পেটে না খেয়ে নাস্তার ২/৩ ঘণ্টা পর দুধ খেতে পারেন।
- বেশিরভাগ মানুষ অনেক অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার পছন্দ করেন। যারা বেশি মসলাযুক্ত খাবার খেতে পছন্দ করেন তাদেরই বেশি গ্যাস এর সমস্যা দেখা যায়। তারা প্রায় প্রত্যেক খাবারেই মশলা বেশি দিয়ে রান্না করে থাকেন। অতিরিক্ত মরিচ বা মশলা দেওয়া খাবার খেলেও কিন্তু পেটে গ্যাস এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সকাল বেলা মশলা জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। এটি গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে দেয়।
- প্যাকেটজাত জুস এবং কার্বনেটেড পানীয় পান থেকে দূরে থাকুন। এই ধরনের পানীয় পেটে গ্যাসের সমস্যা বাড়ায়। এর পরিবর্তে ফলের রস খেতে পারেন।
- অপরিপক্ব বা কাঁচা ফল সকালে খালি পেটে খাবেন না। অপরিপক্ব কলা, আম বা অন্য ফল গ্যাস তৈরি করতে পারে। সাইট্রিক জাতীয় ফল খালি পেটে খেলে তা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়া করে আরও গ্যাস তৈরি করে।
- কাঁচা পেঁয়াজ বা রসুন খাবারে গ্যাস বাড়ায়। তাই সকালের নাস্তায় এসব খাবার বর্জন করুন।
এছাড়া, যে খাবারগুলো আপনার জন্য গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করে, সেগুলো এড়িয়ে চলুন। পাশাপাশি, ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবার খাওয়া এবং খাবারের পর এক গ্লাস হালকা গরম পানি পান করা গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে। তাছাড়াও আদা খুবই উপকারী গ্যাস এর জন্য। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক টুকরো আদা আপনার গ্যাস এর সমস্যা অনায়াসে রোধ করতে পারে।
টিএ/এসবি