Logo

আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনে হুথিদের ওপর মার্কিন বিমান হামলা

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪৮

ইয়েমেনে হুথিদের ওপর মার্কিন বিমান হামলা

যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ওপর শক্তিশালী বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর হামলার কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।  

ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, ‘ইরানের অর্থায়নে পরিচালিত হুথি সন্ত্রাসীরা আমাদের বিমানবাহিনীর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং আমাদের সেনা ও মিত্রদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। তাদের ‘দস্যুতা, সহিংসতা ও সন্ত্রাসের ফলে বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে এবং বহু মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে।’

হুথি পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত ও ৯ জন আহত হয়েছে।

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালানো শুরু করা হুথিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।  

শনিবার রাতে ইয়েমেনের রাজধানী সানা ও সৌদি সীমান্তবর্তী সাদা প্রদেশে একাধিক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।

ইরান-সমর্থিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী সানা ও উত্তর-পশ্চিম ইয়েমেনের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইয়েমেন সরকারের অংশ নয়।

প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সানার বিমানবন্দরের এলাকায় কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়ছে, যেখানে একটি সামরিক স্থাপনাও রয়েছে।

হুথিরা দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ‘জঘন্য আগ্রাসন’ চালিয়ে রাজধানী সানার আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়েছে। তবে জানা গেছে, যুক্তরাজ্য সরাসরি এই হামলায় অংশ নেয়নি। তবে তারা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য জ্বালানি সহায়তা দিয়েছে।  

ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই হামলা সহ্য করা হবে না। আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত ধ্বংসাত্মক শক্তি প্রয়োগ অব্যাহত রাখব।’

হুথিরা দাবি করেছে, তারা শুধুমাত্র ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। যদিও অনেক ক্ষেত্রে এই দাবি বিভ্রান্তিকর ছিল।  

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুথিরা লোহিত সাগর ও অ্যাডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও ছোট নৌকা ব্যবহার করে হামলা চালিয়ে আসছে। তারা দুটি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছে, একটি দখল করেছে ও চারজন নাবিককে হত্যা করেছে।  

হুথিদের প্রতিহত করতে পশ্চিমা যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হলেও, তারা হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যৌথভাবে তাদের ওপর বিমান ও নৌ হামলা চালায়। পাশাপাশি ইসরায়েলও তাদের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করেছে।  

লোহিত সাগরের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সামুদ্রিক বাণিজ্যের প্রায় ১৫ শতাংশ পরিচালিত হয়। হুথিদের হামলার ফলে বড় বড় শিপিং কোম্পানিগুলো বিকল্প পথ হিসেবে আফ্রিকার দক্ষিণ উপকূল ঘুরে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে, যা পরিবহন ব্যয় ও সময় বাড়িয়ে দিচ্ছে।

ট্রাম্প বলেছেন, ‘গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কোনো মার্কিন পতাকাবাহী জাহাজ সুয়েজ খাল অতিক্রম করতে পারেনি। গত চার মাসে কোনো মার্কিন যুদ্ধজাহাজও ওই জলপথে চলাচল করেনি।’

ট্রাম্প হুথিদের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘যদি তোমরা থামো না, তাহলে তোমাদের ওপর এমন নরক নেমে আসবে, যা আগে কখনো দেখনি!’

তবে হুথিরা পাল্টা জানিয়ে বলেছে, এই হামলা তাদের প্যালেস্টাইনের প্রতি সমর্থন কমাতে পারবে না।

এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। আমাদের সেনারা পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, হুথিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইরান ‘সতর্ক নজরদারিতে’ রয়েছে।  

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত হুথিরা লোহিত সাগরে ১৯০টি হামলা চালিয়েছে।  

ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘তোমাদের সম্পূর্ণ দায়ী করা হবে। আমরা এতে কোনো ছাড় দেব না।’

তিনি দাবি করেছেন, আগের বাইডেন প্রশাসনের ‘দুর্বলতার’ কারণে হুথিদের কার্যকলাপ বেড়েছে।

ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর