
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় ব্যাপক হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে। এ হামলায় ইতোমধ্যে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে রয়টার্স বার্তা সংস্থা জানিয়েছে যে গাজা উপত্যকা জুড়ে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা হামাসের ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে’ হামলা চালাচ্ছে।
১৯ জানুয়ারি সংঘর্ষবিরতি শুরুর পর এটিই গাজায় সবচেয়ে বড় আক্রমণ। যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়ানোর আলোচনা কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি।
রয়টার্সের বরাত দিয়ে চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহতে তিনটি বাড়ি, গাজা শহরের একটি ভবন এবং খান ইউনুস ও রাফাহতে কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ মঙ্গলবার সকালে এই হামলার নির্দেশ দেন বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হামাসের বারবার জিম্মি মুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফ ও মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া সব প্রস্তাব নাকচ করার জেরে এই হামলা চালানো হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘এখন থেকে ইসরায়েল সামরিক শক্তি দিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে।’
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সপ্তাহান্তে এই হামলার পরিকল্পনা উপস্থাপন করে, যা রাজনৈতিক নেতৃত্ব অনুমোদন দেয়।
হামলার আগে ইসরায়েল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করেছিল বলে হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র ফক্স নিউজকে জানিয়েছেন।
১ মার্চ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায় শেষ হওয়ার পর সমঝোতার জন্য আলোচনা চলছিল। যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব দেয় যে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপটি এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাড়ানো হোক এবং এর আওতায় হামাসের হাতে থাকা জিম্মি ও ইসরায়েলের হাতে বন্দি ফিলিস্তিনিদের আরও একটি বিনিময় হোক।
তবে আলোচনার সঙ্গে যুক্ত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মার্কিন দূত উইটকফের মাধ্যমে প্রস্তাবিত সমঝোতার গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে মতবিরোধ রয়ে গেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালালে যুদ্ধ শুরু হয়। গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫২০ জনের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটিয়েছে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এই তথ্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ব্যবহার করে।
গাজার ২১ লাখেরও বেশি মানুষের অধিকাংশই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, গাজার প্রায় ৭০ শতাংশ ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
ওএফ