Logo

আন্তর্জাতিক

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ নিষিদ্ধের সুপারিশ মার্কিন কমিশনের

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ০০:০২

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ নিষিদ্ধের সুপারিশ মার্কিন কমিশনের

ভারতে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ ক্রমশ অবনতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত একটি কমিশন। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যার ষড়যন্ত্রে ভারতের গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে।  

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন (ইউএসসিআইএরএফ) তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে,  ২০২৪ সালে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। এ কারণে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও বৈষম্য বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গত বছরের নির্বাচনী প্রচারে মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ও ভ্রান্ত তথ্য প্রচার করেছে।

বুধবার ভারত এই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করে এবং এটিকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মূল্যায়নের অংশ’ বলে অভিহিত করে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়স্বাল এক বিবৃতিতে বলেন, ইউএসসিআইএরএফ বারবার বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে। তারা ভারতের বহুধর্মীয় সমাজ সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টির চেষ্টা করছে, যা প্রকৃতপক্ষে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে প্রকৃত উদ্বেগের পরিবর্তে একটি পরিকল্পিত এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথ সুগম করে।

২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লক্ষ্যবস্তু বানানোর অভিযোগ উঠে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-য়ের বিরুদ্ধে। যা ভারত-মার্কিন সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি করেছে। ওয়াশিংটন এক ব্যর্থ ষড়যন্ত্রের অভিযোগে প্রাক্তন ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিকাশ যাদবকে অভিযুক্ত করেছে। ভারত অবশ্য শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে এবং এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

২০২৪ সালের এপ্রিলে এক নরেন্দ্র মোদি মুসলমানদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে উল্লেখ করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। যা ভারত ‘গভীরভাবে পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।  

২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা মোদি বৈষম্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন যে, তার সরকারের বিভিন্ন নীতি যেমন- বিদ্যুৎ ও ভর্তুকির মতো কর্মসূচি সব সম্প্রদায়ের জন্যই।

কিন্তু মানবাধিকারকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, জাতিসংঘ কর্তৃক ‘মৌলিকভাবে বৈষম্যমূলক’ বলে অভিহিত নাগরিকত্ব আইন, ধর্মান্তর বিরোধী আইন যা বিশ্বাসের স্বাধীনতাকে চ্যালেঞ্জ করে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল ও মুসলমানদের মালিকানাধীন সম্পত্তি ধ্বংসের ঘটনাগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করেছেন।

কমিশন মার্কিন সরকারকে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের জন্য ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যাদব ও গুপ্তচর সংস্থা ‘র’য়ের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে।  

কমিশনটি একটি দ্বিদলীয় মার্কিন সরকারি পরামর্শদাতা সংস্থা, যা বিদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা পর্যবেক্ষণ করে এবং নীতিগত সুপারিশ প্রদান করে। তবে, কমিশনের সুপারিশ বাধ্যতামূলক নয়। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সরকার র-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে কিনা, তা অনিশ্চিত।  

এছাড়াও প্রতিবেদনে কমিউনিস্ট শাসিত ভিয়েতনাম ধর্মীয় কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ন্ত্রিত করার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করেছে। কমিশন ভিয়েতনামকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছে।

ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর