গাজায় যুদ্ধ চান না হামাসের হাত থেকে মুক্ত ইসরায়েলি বন্দিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৭

গাজায় হামাসের বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া তিন ইসরায়েলি তেল আবিবে আয়োজিত সাপ্তাহিক প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন। তারা গাজায় আটক বন্দিদের মুক্তি ও যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে সরব হয়েছেন।
টাইমস অব ইসরায়েলের বরাতে জানা গেছে, লিরি আলবাগ, ওমের ওয়েনকার্ট ও গাদি মোজেস নতুন করে গাজায় সংঘর্ষ শুরুর তীব্র সমালোচনা করেন।
তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ইসরায়েলি সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকলে অবশিষ্ট বন্দিদের জীবন আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।
লিরি আলবাগ বলেন, ‘আবার যুদ্ধ শুরু হলে তার সবচেয়ে বড় মূল্য দিতে হবে বন্দিদের। গাজায় বিমান হামলা হলেই, তার প্রথম শিকার হয় তারা।’
নাহাল ওজ সামরিক ঘাঁটি থেকে অপহৃত এই নারী সেনা স্মরণ করেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে প্রথম অস্ত্রবিরতির ভেঙে যাওয়ার মুহূর্তটি।
আবার যুদ্ধ শুরু হলে তার সবচেয়ে বড় মূল্য দিতে হবে বন্দিদের। গাজায় বিমান হামলা হলেই, তার প্রথম শিকার হয় তারা
লিরি আলবাগ
তিনি বলেন, ‘আমি ভেঙে পড়েছিলাম। আমরা নিশ্চিত ছিলাম—আমরা বাড়ি ফিরব, এই দুঃস্বপ্ন শেষ হবে। কিন্তু দরজা খুলল না, দুঃস্বপ্ন চলতেই থাকল।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো বিজয় নেই—৫৯ জন বন্দি ঘরে না ফেরা পর্যন্ত কোনো বিজয় নেই।’
নোভা মিউজিক ফেস্টিভাল থেকে অপহৃত হওয়া ওমের ওয়েনকার্ট জানান, ‘আমি ৫০৫ দিন বন্দি ছিলাম, এর মধ্যে ১৯৭ দিন একা কাটিয়েছি অনাহারে, অপমানে আর নির্যাতনের মধ্যে। আমি প্রায় পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমি পুরোপুরি এখানে নেই। আমার অর্ধেক এখানে, বাকি অর্ধেক এখনো গাজায় বন্দি।’
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তাদের ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আপনার। দেশের নেতাদের বলছি—চোখ ফিরিয়ে নেবেন না। আমাদের চোখের পানি দেখুন
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ওমের ওয়েনকার্ট
তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তাদের ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আপনার। দেশের নেতাদের বলছি—চোখ ফিরিয়ে নেবেন না। আমাদের চোখের পানি দেখুন।’
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হামাসের কাছ থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ৮০ বছর বয়সী গাদি মোজেস। তিনি জোরালোভাবে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ থামান, গাজা থেকে সেনা সরিয়ে নিন এবং ইসরায়েল যে চুক্তি করেছিল তার দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের হাতে সময় নেই। মাটির নিচে আগুন জ্বলছে। আরও বন্দি মারা যেতে পারেন, এমনকি মৃতদের হদিসও হারিয়ে যেতে পারে। বন্দিদের পরিবারের জন্য এই দুঃস্বপ্ন আর নয়—যুদ্ধ থামান, সবাইকে ফিরিয়ে আনুন। এখনই!’
ওএফ