Logo

আন্তর্জাতিক

হোয়াইট হাউজ

চীনা পণ্যে আজ রাত থেকেই ১০৪ শতাংশ শুল্ক

Icon

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৮

চীনা পণ্যে আজ রাত থেকেই ১০৪ শতাংশ শুল্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ (বুধবার) প্রথম প্রহরেই চীনের সব ধরনের পণ্যের ওপর সর্বমোট ১০৪ শতাংশ হারে শুল্ক বসানোর ঘোষণা দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট মঙ্গলবার এ তথ্য জানান।

চীনের আগের শুল্ক হার ছাড়াও নতুন করে এই শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। বুধবার থেকেই চীনা পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু বেইজিং মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে আমেরিকান পণ্যে ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহার না করায় ট্রাম্প আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এতে চীনা পণ্যে মোট শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ১০৪ শতাংশে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এই সিদ্ধান্তের ‘কঠোর বিরোধিতা’ করছে এবং একে ‘ভুলের ওপর আরেকটি ভুল’ বলে মন্তব্য করেছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি পণ্যে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে বেইজিং।

মঙ্গলবার সকালে মার্কিন শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেলেও, লেভিটের মন্তব্যের পরপরই বাজার নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। বিকেল ৩টার দিকে ডাও জোন্স, নাসডাক ও এসঅ্যান্ডপি ৫০০—সবগুলো সূচকই নেতিবাচক অবস্থায় চলে যায়।

ক্যারোলাইন লেভিট বলেন, যেসব দেশ বিশেষ করে চীন, প্রতিশোধের পথ বেছে নিয়েছে এবং আমেরিকান শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে—তারা বড় ভুল করছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শক্ত মেরুদণ্ডের মানুষ, তিনি ভেঙে পড়বেন না।

তিনি বলেন, চীন একটি চুক্তি করতে চায়, কিন্তু কীভাবে করতে হয়, সেটা তারা জানে না।

প্রথম দফায় ফেব্রুয়ারিতে চীনের সব পণ্যের ওপর ট্রাম্প ১০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছিলেন, কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াই। ওই সময় তিনি চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসনে সহায়তা ও ফেন্টানিল সরবরাহের অভিযোগ তোলেন। গত মাসে সেই শুল্ক হার দ্বিগুণ করা হয়।

গত বছর চীন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ। চীন থেকে মোট ৪৩৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে আমেরিকার রপ্তানি ছিল মাত্র ১৪৪ বিলিয়ন ডলার। এই পাল্টাপাল্টি শুল্ক ব্যবস্থা উভয় দেশের স্থানীয় শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং কর্মসংস্থানে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ শেষে চীনা পণ্যের ওপর গড় শুল্কহার ছিল ১৯.৩ শতাংশ। বাইডেন প্রশাসন সেই হার কিছুটা বাড়িয়ে ২০.৮ শতাংশে নিয়ে যায়। তবে এখন নতুন শুল্ক আরোপের পর এই গড় হার ১২৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।

শুল্ক বৃদ্ধির কারণে অতীতে অনেক আমেরিকান কোম্পানি চীন বাদ দিয়ে মেক্সিকো ও ভিয়েতনামের মতো দেশে উৎপাদন সরিয়ে নেয়। তারপরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের জন্য চীনই এখনো শীর্ষ সরবরাহকারী—যেমন খেলনা, স্মার্টফোন, কম্পিউটার ও বিভিন্ন ভোক্তা ইলেকট্রনিক পণ্য। এসব পণ্যের দাম এখন বাড়তে পারে আমেরিকান বাজারে।

অন্য দেশগুলোকেও পড়তে হবে শুল্কের মুখে
শুধু চীন নয়—আরও বহু দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপরও নতুন শুল্ক বসাতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই হার ১১ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। মধ্যরাতের মধ্যেই এসব শুল্ক কার্যকর হবে।

তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কিছু দেশের সঙ্গে ‘বিশেষভাবে তৈরি’ বা ‘টেইলার-মেড’ বাণিজ্য চুক্তির কথা ভাবছেন বলে জানিয়েছেন লেভিট। তবে এসব চুক্তি ‘অফ-দ্য-শেলফ’ বা তৈরি করা কোনো সহজ ফর্মুলা অনুযায়ী হবে না বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট চান এই শুল্কগুলো যেন কার্যকর হয়। তিনি বিশ্বাস করেন, এগুলো কার্যকর করাই এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজনীয়।

ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর