ছবি : সংগৃহীত
কাজাখস্তানে আজারবাইজানের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাকে ‘দুঃখজনক ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ ঘটনার জন্য আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি ও বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুতিন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বলে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) ক্রেমলিনের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার আকাশসীমায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং আবারও নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর ও আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন তিনি।
যদিও উড়োজাহাজটি বিধ্বস্তের ঘটনায় শনিবারের আগে পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি ক্রেমলিন। তবে রুশ বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ বলেছিল, চেচনিয়ায় ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার কারণে এই অঞ্চলের পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ ডিসেম্বর আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের এমব্রায়ার-১৯০ সিরিজের জে২-৮২৪৩ উড়োজাহাজটি আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে রাশিয়ার চেচনিয়া প্রদেশের রাজধানী গ্রোজনির দিকে রওনা হয়েছিল। সেদিন গ্রোজনিতে ব্যাপক কুয়াশার কারণে বিমানবন্দরের রানওয়ে অস্পষ্ট হওয়ায় ফের বাকুর দিকে ফিরে আসছিল বিমানটি। পথে কাজাখস্তানের আকতাউ শহরে বিধ্বস্ত হয় সেটি।
এই দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রথমবারের মতো কথা বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয়ভাবে ইউক্রেনীয় ড্রোনগুলোকে প্রতিহত করার সময় দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চেচনিয়ায় অবতরণের চেষ্টা করার সময় রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ছোঁড়া গোলার কবলে পড়েছিল যাত্রীবাহী ওই বিমান। পরে কাস্পিয়ান সাগর পেরিয়ে যেতে বাধ্য হয় উড়োজাহাজটি। কিন্তু কাজাখস্তানের আকাশে পৌঁছানোর পর সেটি বিধ্বস্ত হয়। এর ফলে উড়োজাহাজের ৬৭ আরোহীর মধ্যে ৩৮ জন নিহত হন।
আজারবাইজানের বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ ও অন্যরা বলছেন, উড়োজাহাজের জিপিএস সিস্টেমগুলো ইলেকট্রনিক জ্যামিংয়ে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয় এবং তারপরে এটি রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উড়োজাহাজটির বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা বিধ্বস্তের আগ মুহূর্তে বিকট শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন। উড়োজাহাজটি যে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল, তার ইঙ্গিত পাওয়া যায় যাত্রীদের বর্ণনায়।
উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের এই ঘটনায় আজারবাইজান এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেনি। তবে দেশটির পরিবহনমন্ত্রী বলেছেন, বিমানটিতে ‘বহিরাগত হস্তক্ষেপের’ বিষয় ছিল এবং অবতরণের চেষ্টা করার সময় ভেতরে ও বাইরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
এসবি