লাদাখ সীমান্ত
নতুন ২ প্রদেশের ঘোষণা দিল চীন, তীব্র প্রতিবাদ ভারতের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৪
ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-চীন সীমান্ত। গত বছরের অক্টোবরে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে চুক্তি হয় দুদেশের মধ্যে। কিন্তু সেই লাদাখের পাশে দুটি নতুন ‘প্রদেশ’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে চীন। হেয়ান ও হেকাং নামের নতুন দুই প্রশাসনিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার এমন ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, চীনের ঘোষিত কাউন্টির কিছু অংশ ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখের মধ্যে পড়ে। এভাবে চীনের দুটি কাউন্টি প্রতিষ্ঠা ঘোষণার পর ভারত কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে আপত্তি ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়া গত ২৭ ডিসেম্বর জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম চীনের জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সরকার দুটি নতুন কাউন্টি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করেছে। সেই দুই কাউন্টির নাম হে'আন ও হেকাং। কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ও রাষ্ট্রীয় পরিষদ এটি অনুমোদনও দিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, তথাকথিত কাউন্টিগুলোর কিছু অংশ লাদাখের অধীনে পড়ে। ভারত কখনই এই অঞ্চলে ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনের অবৈধ দখলদারিত্বকে মেনে নেবে না। আমরা দুটি নতুন কাউন্টি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেখেছি। এই তথাকথিত কাউন্টিগুলোর এক্তিয়ারের কিছু অংশ ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে পড়েছে।
তিনি বলেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনের বেআইনি দখলদারিত্ব আমরা কখনো মেনে নেইনি। নতুন কাউন্টি গঠন ওই এলাকার ওপর আমাদের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে ভারতের দীর্ঘস্থায়ী ও ধারাবাহিক অবস্থানের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। চীনের অবৈধ ও জোরপূর্বক দখলদারিত্বকেও বৈধতা দেবে না। আমরা কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে চীনের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছি।
এদিকে গত ২৫ ডিসেম্বর সিনহুয়া আরেক প্রতিবেদনে জানায়, তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ইয়ারলুং সাংপো নদীর ওপর একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করছে চীন। এর জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ব্রহ্মপুত্রের উপর চীনা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের বিষয়েও ভারত নিজেদের মতামত ও উদ্বেগ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় মুখোমুখি হয় ভারতও চীনের সেনাবাহিনী। লোহার রড ও কাঁটাতার জড়ানো হাতিয়ার নিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা লড়াই চলে। রক্তক্ষয়ী সেই সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় জওয়ান মারা যান। ১৯৭৫ সালে পর এই প্রথম প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পরেই সীমান্তে কার্যত যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে কয়েক দফা আলোচনায় বসে দুই দেশের সেনাবাহিনী।
ওএফ