মার্কিন মডেল পরিচয়ে ৭০০ নারীর সাথে প্রতারণা
![Icon](https://www.bangladesherkhabor.net/uploads/settings/ezgif-7-c58f72a6c2icon-2-1730277221.png)
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৪৬
![মার্কিন মডেল পরিচয়ে ৭০০ নারীর সাথে প্রতারণা](https://www.bangladesherkhabor.net/uploads/news_photos/2025/01/04/gctosh98_delhi-us-model-scam-_625x300_04_January_25-6778f571a0528.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
দিনের বেলা উত্তরপ্রদেশের নয়দায় একটি বেসরকারি সংস্থায় নিয়োগকর্তা হিসেবে কাজ করেন তিনি। আর রাতে তিনি একজন মার্কিন মডেল। এভাবেই কয়েক বছর ধরে অনলাইন ডেটিং অ্যাপে একের পর এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন তিনি। সেই সংখ্যাটা ৭০০-এরও বেশি।
তার শিকারের তালিকায় ছিল ১৮-৩০ বছরের নারীরা। মূলত রাতেই এ ধরণের কাজ করতেন ভারতীয় এ যুবক। কখনও ‘বাম্বল’, কখনও ‘স্ন্যাপচ্যাট’, কখনও আবার হোয়াটসঅ্যাপে তাদের সঙ্গে আলাপ জমাতেন। তারপর ধীরে ধীরে বিশ্বাস অর্জন, তারপর ঘনিষ্ঠ ছবি পাঠানোর মতো পর্বও চলতো। আর তারপরই শুরু হত যুবকের প্রতারণা।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সেই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লিরই বাসিন্দা ওই যুবক। নাম তুষার বিশত। বিজনেস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। বর্তমানে নয়দার একটি বেসরকারি সংস্থায় ‘টেকনিক্যাল রিক্রুটার’-এর পদে কর্মরত। ভাল বেতন পান। কিন্তু নারীদের প্রতি আকর্ষণ এবং আরও টাকা উপার্জনের তাগিদে পা রাখেন সাইবার অপরাধের দুনিয়ায়।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, একটি অ্যাপের মাধ্যমে ভার্চুয়াল ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল নম্বর জোগাড় করেন তিনি। তার পর বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপে নিজের ভুয়া প্রোফাইল বানান। সেখানে নিজেকে মার্কিন মডেল হিসাবে পরিচয় দেন। ব্রাজিলের এক মডেলের ব্যক্তিগত তথ্য এবং ছবি জোগাড় করে মহিলাদের সঙ্গে অ্যাপের মাধ্যমে আলাপ জমাতেন তিনি। তাদের বিশ্বাস অর্জন করে ধীরে ধীরে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা, ছবি আদান-প্রদান করতেন। নারীরা তাকে বিশ্বাস করে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও পাঠালে সেগুলোকেই ব্যবহার করে ওই নারী বা তরুণীকে ব্ল্যাকমেল করে তাদের কাছ থেকে এভাবেই টাকা আদায় করতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ডেটিং অ্যাপ ‘বাম্বল’-এর মাধ্যমে ৫০০ নারীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন তুষার। আর ২০০ নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন ‘স্ন্যাপচ্যাট’ এবং হোয়াটসঅ্যাপে।
গত বছরের ডিসেম্বরে তুষারের প্রতারণার ফাঁদে পড়েন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। ওই ছাত্রীর সঙ্গে আলাপ জমানোর পর তার বিশ্বাস অর্জন করেন তুষার। তারপর তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত বিষয়ে কথোপকথনও হতে থাকে। সেই ছাত্রী তার ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও পাঠান। তুষারকে সামনাসামনি দেখা করতেও অনুরোধ করেন। কিন্তু অভিযোগ, নানা অছিলায় তুষার সেই সাক্ষাৎ এড়িয়ে গিয়েছেন।
কিছু দিন পর থেকেই ছাত্রীকে তার পাঠানো ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও দেখিয়ে সমাজমাধ্যমে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন। এভাবে ছাত্রীর কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা আদায় করেন। আরও টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তুষার। এরপর সেই ছাত্রী তার পরিবারকে বিষয়টি জানাতে বাধ্য হন। তারপরই পুলিশে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ পূর্ব দিল্লির শকরপুরে তুষাদের হদিস পায়। তার কাছ থেকে ১৩টি ক্রেডিট কার্ড, ফোনে কয়েকশো নারীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, তুষারের বাবা পেশায় গাড়িচালক, মা গৃহিণী। তার বোন গুরুগ্রামে একটি সংস্থায় কাজ করেন।
এসবি