Logo
Logo

আন্তর্জাতিক

চীনে নতুন ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক, যা বললেন বিশেষজ্ঞরা

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:০৫

গত শুক্রবার থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চীনে নতুন ভাইরাসের আক্রমণের খবরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে চীনে ছড়িয়ে পড়া নতুন এই ভাইরাস সম্পর্কে সবার মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, চীনের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ভিড়। মুখে মাস্ক পরে চিন্তিত মুখে বসে রয়েছেন রোগীর পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়স্বজন।

সেই সাথে ভিডিওগুলোতে দাবি করা হয়েছে যে, রোগীদের প্রায় প্রত্যেকেই হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এ আক্রান্ত। 

এদিকে চীন স্পষ্ট করেছে, এইচএমপিভি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। চীনের সরকার পুরো বিষয়টিকে ‘শীতকালীন সংক্রমণ’ বলে ব্যাখ্যা করেছে। দায়ী করেছে মৌসুমকেই। 

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ও পর্যটক এবং নাগরিকদের আশ্বস্ত করে বলেছে, চীন ভ্রমণ সম্পূর্ণ ভাবে নিরাপদ। 

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র মাও নিং জানিয়েছেন, নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লেও বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, ‘শীতের মৌসুমে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের প্রবণতা খুব বেশি। আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি যে, সরকার চীনে আগত বিদেশিদের স্বাস্থ্য নিয়ে যত্নশীল।’ 

সম্প্রতি নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ভীড়ের যে ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সে প্রসঙ্গে মুখপাত্র দাবি করেন, ভাইরাস মারাত্মক নয়। সংক্রমণের হারও গত বছরের তুলনায় কম। 

কোভিড-১৯ মহামারির পাঁচ বছর পর চীনে আবারও নতুন ভাইরাসের সংক্রমণের খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে। এই ভাইরাসের খবর প্রকাশ্যে আসার পর ভারতেও উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা বাড়ছে। তবে দেশের নাগরিকদের অযথা আতঙ্কিত হতে বারণ করেছে ভারত।

শুক্রবার ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলা হয়েছে, শ্বাসযন্ত্রের এই সংক্রমণ নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। 

এইচএমপিভি-র সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা দিয়েছেন ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ হেল্থ সার্ভিসেস (ডিজিএইচএস)-এর প্রধান অতুল গয়াল। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। 

গয়াল বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’

ভারতের হাসপাতালগুলো এই ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, মেটানিউমোভাইরাস নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই। এটির সংক্রমণ কোভিডের মতো ছড়াবে, এমন ভেবে আতঙ্কিত হওয়ারও কারণ নেই। 

উল্লেখ্য, এইচএমপিভির সংক্রমণ নতুন নয়। সেই ভাইরাস প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল প্রায় দুই দশক আগে, ২০০১ সালে। 

নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞেরা ২০০১ সালে শিশুদের শ্বাসযন্ত্রে প্রথম এই ভাইরাসের নমুনা শনাক্ত করেন। তারপর ২৪ বছর কেটে গেলেও সেই ভাইরাসের কোনও টিকা এখনও তৈরি হয়নি। 

অন্য দিকে, সেরোলজিক্যাল গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, মেটানিউমোভাইরাস কমপক্ষে ৬০ বছর ধরে পৃথিবীর বুকে বিদ্যমান এবং সাধারণ শ্বাসযন্ত্রের প্যাথোজেন হিসাবে সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে। মূলত শীতকালে এর সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়। 

মেটানিউমোভাইরাসের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর, সর্দি এবং কাশি। খুব কম সংখ্যক রোগী নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হতে পারেন। মৃত্যুর হারও খুব কম। 

সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকার বেসরকারি সংস্থা ‘ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক’ জানিয়েছে, মেটানিউমোভাইরাসের চিকিৎসা হয় এমন কোনও ‘অ্যান্টিভাইরাস’ ওষুধ নেই। 

চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-ও তাদের ওয়েবসাইটে সেই ভাইরাসের কোনও টিকার কথা উল্লেখ করেনি। 

এইচএমপিভি আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি বা শিশু গুরুতর অসুস্থ হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে। চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন, কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করা যেতে পারে। 

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সংক্রামিত ব্যক্তির নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত এবং ভিড় জায়গায় মাস্ক পরে থাকা উচিত। এছাড়াও, সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ঘন ঘন হাত ধোয়া আবশ্যক। জীবাণুমুক্তকরণের দিকেও বিশেষ নজর থাকা উচিত।

সূত্র : আনন্দবাজার।

এসবি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর