ট্রাম্পকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত গ্রিনল্যান্ড
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৬
ছবি : সংগৃহীত
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত গ্রিনল্যান্ড বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুটে বি. এগেদে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য ও খনিজসম্পদের ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করা হবে।’
স্থানীয় সম্প্রচারমাধ্যম কেএনআর এর বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এগেদে বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরও সম্পর্ক স্থাপন করতে চাই এবং ট্রাম্পের প্রশাসনের সাথে নতুন সহযোগিতার সুযোগ খুঁজছি। আগামী বছরগুলোতে গ্রিনল্যান্ডের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বাড়বে এবং এতে অন্যান্য দেশও এ অঞ্চলে তাদের উপস্থিতি বাড়াতে চাইবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ধরনের সামরিক সংঘাত যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
এর আগে রোববার (১২ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের সাথে কথা বলার সময় গ্রিনল্যান্ডের কৌশলগত গুরুত্ব এবং সমৃদ্ধ সম্পদের কথা তুলে ধরেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যানস। এসময় তিনি জানান, গ্রিনল্যান্ডে অস্ত্র ব্যবহারের কোনো পরিকল্পনা নেই যুক্তরাষ্ট্রের।’
জেডি ভানসের মন্তব্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এগেদে জানান, ‘এ কথা আমাদের জন্য স্বস্তিকর’।
তিনি বলেন, 'প্রথমবার শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু ভাইস প্রেসিডেন্ট গতকাল বলেছেন
গ্রিনল্যান্ডের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান আর্কটিক অঞ্চলে হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনসহ বড় দেশগুলো এই অঞ্চলকে নিজেদের কৌশলগত স্বার্থের অংশ হিসেবে দেখছে। তবে এগেদে এই পরিস্থিতিকে হুমকি হিসেবে না দেখে একটি সহযোগিতার সুযোগ হিসেবেই দেখতে চান।
এদিকে শনিবার মার্কিন সংবাদসংস্থা এক্সিওস জানিয়েছে, সম্প্রতি ডেনমার্ক দ্বীপটিতে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোসহ গ্রিনল্যান্ডে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য ট্রাম্পকে প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডেনমার্ক সরকার ট্রাম্পকে গ্রিনল্যান্ড দখল করা থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছে তার প্রধান কারণ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ডেনমার্ক একটি ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ এবং ওয়াশিংটনের মিত্র। তাই তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে রাজনৈতিক সংঘর্ষ এড়াতে চায়।
প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ডিসেম্বর মাসে তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি ‘অপরিহার্য প্রয়োজন’ বলে উল্লেখ করেন। এর আগেও তিনি গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পর ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট্টে ফ্রেডেরিকসেন গত শুক্রবার বলেন, তিনি শীঘ্রই ট্রাম্পের সাথে গ্রিনল্যান্ড সম্পর্কিত আলোচনা করবেন।
তিনি আরও বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন না যে ট্রাম্প জোর করে আর্কটিক দেশটি দখল করার চেষ্টা করবেন।
উল্লেখ্য, গ্রিনল্যান্ড পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ। ১৯৭৯ সাল থেকে ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড। এর অবস্থান আর্কটিক এবং আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে হওয়ায় এটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটির জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি উত্তর আমেরিকা থেকে ইউরোপে যাওয়ার সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত পথ।
এসবি