Logo

আন্তর্জাতিক

দাবানলে ছারখার লস অ্যাঞ্জেলেস, চলছে লুটপাট

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৫৮

দাবানলে ছারখার লস অ্যাঞ্জেলেস, চলছে লুটপাট

ছবি : সংগৃহীত

ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বলতে থাকা দাবানলের আগুন এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং বাতাসের গতিবেগ বাড়তে থাকায় আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে পালাচ্ছেন আক্রান্ত এলাকার বাসিন্দারা। আর এই সুযোগেই অনেকেই বাড়ি-ঘর লুটপাট করছেন। 

এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দাবানলে পুড়তে থাকা এলাকায় চুরি ও লুটপাট চালানোর ঘটনায় নতুন করে আরও ১০ দশজনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন জনের বিরুদ্ধে দুই লাখ মার্কিন ডলারেরও বেশি অঙ্কের মালামাল লুটের অভিযোগ এসেছে বলে জানিয়েছেন লস অ্যাঞ্জেলেসের জেলা অ্যাটর্নি নাথান হোচম্যান। 

এ নিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৯ জনকে আটক করল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের কয়েক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। 

বিভিন্ন এলাকা থেকে লুটপাট ও চুরির আরো অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এই অবস্থায় আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ‘ইতোমধ্যেই যারা দাবানলের আগুনে সবকিছু হারিয়েছে, তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে আর ক্ষতি করবেন না বা তাদের বাড়ি ঘরে লুটপাট চালাবেন না।’ 

আক্রান্ত এলাকায় থেকে জনসাধারণকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আগেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এই অবস্থা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। কেউ কারফিউ ভাঙলে তাকে এক হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তারা। 

লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল আক্রান্ত এলাকায় লুটপাট চালাতে অনেকে ছদ্মবেশের আশ্রয় নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ। লুটপাট করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত যারা আটক হয়েছেন, তাদের মধ্যে কমপক্ষে দুই জন দমকল কর্মী সেজে লুট করতে গিয়েছিলেন বলে জানানো হয়েছে। 

এই অবস্থায় সবাই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশের কর্মকর্তারা। এদিকে চুরি ও লুটপাট ঠেকাতে আক্রান্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে, তিনি ন্যাশনাল গার্ডের আরও সদস্য চেয়েছেন। চারশো জন এর মধ্যেই কাজ করছে। 

এর আগে ক্যালিফোর্নিয়া গভর্নর গেভিন নিউসাম এক হাজার অতিরিক্ত ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

শেরিফ লনু বলেন, ‘মালিবু এলাকায় আমি একজনকে দেখলাম একেবারে দমকল কর্মীর মতো। তিনি বসেছিলেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে, আপনি ঠিক আছেন কি না। বুঝতেই পারিনি যে তাকে হ্যান্ডকাফ পরাতে হবে।’ 

ওই ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাকে পুলিশে দিয়েছি। কারণ, তিনি দমকল কর্মীর পোশাক পরে লুটপাটে ব্যস্ত ছিলেন। অথচ তিনি দমকল বাহিনীর কর্মী নন। তিনি একটি বাড়িতে লুটপাট করছিলেন। এমন পরিস্থিতি আমাদের পুলিশ কর্মকর্তাদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে এখন ১৪ হাজার দমকল কর্মী কাজ করছে। তাদের সহায়তা করছে ৮৪টি বিমান ও ১ হাজার ৩৫৪টি ফায়ার ইঞ্জিন। ১ লক্ষ ৫ হাজার মানুষ এখনও বাধ্যতামূলক অন্যত্র অবস্থান করছেন। আরো ৮৭ হাজারেরও বেশি লোককে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এসবি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর