Logo

আন্তর্জাতিক

বিদায়ী ভাষণে 'অতি-ধনী অলিগার্ক' সম্পর্কে হুঁশিয়ারি দিলেন বাইডেন

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২৩

বিদায়ী ভাষণে 'অতি-ধনী অলিগার্ক' সম্পর্কে হুঁশিয়ারি দিলেন বাইডেন

ছবি : সংগৃহীত

দেশে কতিপয় ‘অতি-ধনী অলিগার্ক’ শিকড় গাড়ছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে তার বিদায়ী ভাষণে তিনি বলেন, ‘একটি প্রযুক্তি-শিল্প কমপ্লেক্স আমেরিকানদের অধিকার এবং গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ লঙ্ঘন করছে।’

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ভয়েস অব আমেরিকা। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওভাল অফিস থেকে ভাষণ দেওয়ার সময় বাইডেন কতিপয় মানুষের হাতে সম্পদ এবং ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেন। 

তিনি বলেন, ‘আজ, আমেরিকায় একটি ব্যাপক সম্পদ, ক্ষমতা এবং প্রভাবের অধিকারী অলিগার্কি আবির্ভূত হচ্ছে। যেটা আক্ষরিক অর্থে আমাদের গোটা গণতন্ত্র, আমাদের মৌলিক অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা হুমকির মুখে ফেলছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘কতিপয় অতি-ধনী মানুষের হাতে ক্ষমতার বিপজ্জনক কেন্দ্রীকরণের দিকে এবং তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার যদি না থামানো হয় তাহলে তার বিপজ্জনক পরিণতির দিকে যাবে।’

অতীতে সামরিক শিল্প কমপ্লেক্স সম্পর্কে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট আইজেনহাওারের হুঁশিয়ারির কথা স্মরণ করে বাইডেন বলেন, ‘আমি সমানভাবে প্রযুক্তি-শিল্প কমপ্লেক্সের সম্ভাব্য উত্থান সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, যেটা আমাদের দেশের জন্য প্রকৃত হুমকি হতে পারে। 

প্রসঙ্গত, আগামী সোমবার (২০ জানুয়ারি) দ্বিতীয় দফায় নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন জো বাইডেন।

বাইডেনের এ হুঁশিয়ারি এমন সময়ে এলো যখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী কিছু ব্যক্তি এবং প্রযুক্তি শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ কর্ণধার সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্পের পক্ষে চলে গেছে। বিশেষ করে নভেম্বর নির্বাচনে তার বিজয়ের পর। 

প্রসঙ্গত, ধনকুবের ইলন মাস্ক ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় সহায়তার জন্য ১০ কোটি ডলার ব্যয় করেন। মেটার মার্ক জাকারবার্গ আর অ্যামাজনের জেফ বেজোস-এর মত অন্যান্য কর্মকর্তা ট্রাম্পের অভিষেক ভাণ্ডারে অনুদান দিয়েছেন এবং ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ক্লাবে গিয়ে তার সাথে দেখা করেছেন। 

ভাষণে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের বিচার থেকে দায়মুক্তির অবসান ঘটানোর জন্য বাইডেন সংবিধান সংশোধনেরও ডাক দেন।

এর আগে গত বছর সুপ্রিম কোর্ট ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের কাছে পরাজয়ের পর ফলাফল পাল্টে দেওয়ার প্রচেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারি অভিযোগ থেকে ট্রাম্পকে দায়মুক্তি দেয়। 

বুধবার রাতের ভাষণ শুধু তার প্রেসিডেন্সি নয়, রাজনীতিতে পাঁচ দশকের সমাপ্তি টানলো। তিনি এক সময়ে দেশের সর্বকনিষ্ঠ সিনেটর ছিলেন। ১৯৭২ সালে ৩০ বছর বয়সে ডেলাওয়ের রাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।

বাইডেন ১৯৮৮ এবং ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেন এবং পরে বারাক ওবামা তাকে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট রানিং মেট হিসেবে বেছে নেন। 

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুই মেয়াদ দায়িত্ব পালন করার পর ধারণা করা হয়েছিল তিনি অবসর নিয়েছেন। কিন্তু ২০২০ সালে তিনি অপ্রত্যাশিত ভাবে ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হিসেবে রাজনীতির মঞ্চে ফিরে আসেন এবং ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস থেকে বিতাড়িত করেন।

তবে বাইডেন যেভাবে আশা করেছিলেন, সেভাবে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করছেন না। তিনি তার বয়স সম্পর্কে ভোটারদের উদ্বেগ উপেক্ষা করে পুনঃনির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করেছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে তার বয়স হতো ৮৬। 

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে টেলিভিশন বিতর্কে হোঁচট খাওয়ার পর বাইডেন নিজ দলের চাপে নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে প্রার্থী হিসেবে অনুমোদন করেন। কিন্তু নির্বাচনী দৌড়ে পরাজিত হন হ্যারিস। 

এখন বাইডেন এমন একজনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন, যাকে তিনি দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। 

এসবি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর