এইতো সেদিনের কথা
দু’ নয়নে দেখলাম পৃথিবীটা
আঁধার থেকে বেরিয়ে
আলোর পথ পেরিয়ে
আজ আমি ভাবছি—
এইতো সেদিনের কথা
প্রথম মা বলে ডাকা
চিৎকার করে বেরিয়ে
হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে
হাঁটি হাঁটি পা চলা—
এইতো সেদিনের কথা
বাবার কোল ভিজিয়ে দেওয়া
প্রথম বকা খাওয়া
কেঁদে আমি দিশেহারা
সময় পেরিয়ে যাওয়া—
এইতো সেদিনের কথা
প্রথম ইস্কুলে যাওয়া
মায়ের আঁচলে লুকিয়ে
ভয়ে বুকখানা শুকিয়ে
ম্যাডামের ক্লাস করা—
এইতো সেদিনের কথা
বন্ধুর সাথে ঝগড়া
বন্ধুকে মেরে ধরে
ঠোঁট ফাটিয়ে দিয়ে
স্যারের চোখে পরা
তারপর জুতা পেটা—
এইতো সেদিনের কথা
মাঠে খেলতে যাওয়া
জুতো ছাড়া বল খেলা
প্রথম গোল করা
চুল ছুঁয়ে যায় হাওয়া—
এইতো সেদিনের কথা
মেট্রিক পাস করা
কলেজ লেভেলে ওঠা
মেয়েদের সাথে চলা
চানাচুর ভাজা খাওয়া—
এইতো সেদিনের কথা
প্রথম প্রেমে পড়া
চোখে চোখে কথা বলে
চিঠি চালাচালি করে
প্রেমিকার হাত ধরে
পার্কের পথ চলা—
এইতো সেদিনের কথা
প্রথম ছ্যাকা খাওয়া
কনে পক্ষ হয়ে
প্রেমিকার বিয়ে খেয়ে
দেবদাস হয়ে যাওয়া—
এইতো সেদিনের কথা
প্রথম বিয়ে করা
মেয়ে দেখতে গিয়ে
বোকা হয়ে গিয়ে
তিনটা কবুল বলা—
এইতো সেদিনের কথা
প্রথম বাবা হওয়া
অপারেশন থিয়েটারে
অসহ্য চিৎকারে
নিজেকে আবার দেখা—
এইতো সেদিনের কথা
ছেলে মেয়ের লেখা পড়া
চাকরি ব্যবসা করে
ঘুম নাওয়া খাওয়া ছেড়ে
সংসার টেনে যাওয়া—
এইতো সেদিনের কথা
ছেলে মেয়ের বিয়ে দেয়া
প্রেমিকার সাথে ছেলের
প্রেমিকের সাথে মেয়ের
হুট করে ভেগে যাওয়া—
এইতো সেদিনের কথা
ছেলের সংসারে থাকা
পুত্রবধূর বকা
নাতি নাতনির কথা
কুজো হয়ে পথ চলা—
এইতো সেদিনের কথা
অসুখটা বেড়ে যাওয়া
বিছানায় পড়ে থাকা
হাঁটাচলা থেমে যাওয়া
বউ কেঁদে দিশেহারা—
এইতো সেদিনের কথা
হাসপাতালে আসা
কেবিন বুকিং দেয়া
নার্সদের বকা শোনা
ব্যথায় কাতর হওয়া—
এবার আজকের কথা
সবাই এসে দেখেছে
বউ বারবার কেঁদেছে
ছেলে মনে মনে হেসেছে
পৃথিবী ছাড়ার অপেক্ষা—
শেষ সেদিনের কথা...