পবিত্র কোরআনের ১১৪টি সুরাকে ৩০ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। পরিভাষায় যেগুলোকে পারা বলা হয়। মাহে রমজানে বাংলাদেশের খবরের পাঠক-শ্রোতাদের দিনে এক পারা করে তিলাওয়াত উপহার দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। তিলাওয়াত করেছেন রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত মাদরাসাতুল মারওয়াহর প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম হাফেজ মাওলানা কারী মাঈনুদ্দীন ওয়াদুদ।
বুধবার (৪ রমজান, ৫ মার্চ) রইল চতুর্থ পারার তিলাওয়াত। আজকের তিলাওয়াতে রয়েছে সুরা আলে ইমরানের ৯২ নম্বর আয়াত থেকে সুরাটির শেষ পর্যন্ত এবং সুরা নিসার প্রথম ২৩ আয়াত।
সুরা নিসার সারমর্ম—
পবিত্র কোরআনের চতুর্থ সুরার নাম সুরা নিসা। নিসা মানে স্ত্রীজাতি। এই সুরায় ২৪ রুকু, ১৭৬ আয়াত। তৃতীয় হিজরিতে ওহুদের যুদ্ধের পর এটি অবতীর্ণ হয়। এতে উত্তরাধিকার এবং এতিমের অধিকার বর্ণিত রয়েছে।
পঞ্চম হিজরিতে মুসতালিকের যুদ্ধে পানির অভাব দেখা দিলে তায়াম্মুমের আদেশ জারি হয়। এ সুরায় মুসলমানদের চরিত্রের কথা বর্ণিত হয়েছে। তবে এ সুরায় নারীদের বিধানের বর্ণনা বেশি বলে এর নাম হয়েছে সুরা নিসা।
রাসুল (সা.) মদিনায় হিজরত করে আসার পর প্রাথমিক বছরগুলোতে সুরা নিসা নাজিল হয়। এর বেশির ভাগ অংশই নাজিল হয় বদরের যুদ্ধের পরে। মদিনায় একটি ইসলামি রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হওয়ার পর নবগঠিত রাষ্ট্রের যাবতীয় কাঠামো প্রতিষ্ঠা পেতে শুরু করে।
মুসলমানদের নিজেদের ইবাদত, আচরণ ও সমাজব্যবস্থা নিয়ে নানা বিধানের প্রয়োজন দেখা দেয়। ইসলামের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার জন্য শত্রুপক্ষ তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করার চেষ্টা করছে। নিজেদের ভৌগোলিক ও ভাবগত সীমারেখা সংরক্ষণের জন্য মুসলমানরা সে সময় নিত্যনতুন সমস্যার মুখোমুখি। ঠিক এমন সময়ই সুরা নিসা নাজিল হয়।
নারী ও পরিবার হলো একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষুদ্র একক, কিন্তু একটি সুসংগঠিত ও প্রধান বুনিয়াদ। সুরাটিতে এ প্রসঙ্গে বিধান দেওয়া হয়েছে। জাহিলিয়া যুগে নারীদের প্রতি যেসব অবিচার চলত, সেগুলোর মূলোৎপাটন করা হলো। এ ছাড়া এমন বহু বিধিবিধান দেওয়া হলো, যার কারণে সুরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল।
সুরাটির সূচনায় তাকওয়া অর্জনের আহ্বান করা হয়েছে, আর পুরো সুরাব্যাপী তার ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
নারীর অধিকারের কথা
প্রাপ্তবয়স্ক হলে এতিমদের অর্থসম্পদ ফিরিয়ে দিতে হবে। তা আত্মসাৎ করা যাবে না। খারাপ মাল দিয়ে তাদের ভালো মাল নিজে নেওয়া যাবে না। এতিম ছেলে ও মেয়ে উভয়ের সম্পদের ক্ষেত্রেই এ বিধান প্রযোজ্য।
একসঙ্গে চারজন নারীকে বিয়ে করার সুযোগ থাকলেও শর্ত হচ্ছে স্বামীকে তাদের অধিকার আদায়ে সক্ষম হতে হবে। তাদের সঙ্গে ন্যায়সংগত আচরণ করতে হবে। আর নিখুঁতভাবে তা না পারলে একজন স্ত্রী নিয়ে সন্তুষ্টচিত্তে সংসার করতে হবে।
বিএইচ/