Logo

গণমাধ্যম

৪৫ কর্মীর ৩ মাসের বেতন-বোনাস বাকি রেখেই খুলল ভোরের কাগজ

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৮:০৪

৪৫ কর্মীর ৩ মাসের বেতন-বোনাস বাকি রেখেই খুলল ভোরের কাগজ

অষ্টম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নসহ কয়েকটি দাবিতে সাংবাদিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে গত ২০ জানুয়ারি অকস্মাৎ দৈনিক ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৬৬ দিন পর গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি’ নিয়ন্ত্রণে আসার কথা বলে প্রধান কার্যালয় ফের খুলে দেওয়া হয়। তবে আন্দোলনকারী ৪৫ জন কর্মীর ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদের বোনাস পরিশোধ করা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অন্য কর্মীরা বেতন-বোনাস পেয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রেসকর্মী বলেন, ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ আবারও আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ২৭ মার্চ দুপুরের মধ্যে তিন মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করেনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আমি কীভাবে ঈদ করব? গ্রামের বাড়ি যে যাবো সে উপায়ও নেই। বাড়িওয়ালা বলে দিয়েছেন, বকেয়া ভাড়া না দিয়ে কোথাও যাওয়া যাবে না। 

বার্তাকক্ষের আরেকজন কর্মী বলেন, আমাদের তিন মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস বকেয়া রেখেই কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার কথা বলে অফিস খুলে দিয়েছে। অথচ আমরা চরম দুরবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। ঈদের এই সময়ে সন্তানদের মুখের দিকে তাকাতেও পারছি না। আশা করবো ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ আমাদের সঙ্গে এই প্রতারণার বিষয়ে ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।

এ বিষয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ভোরের কাগজের সাংবাদিক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের আন্দোলনের সঙ্গে মাঠে থাকবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন।

বেতন বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের দাবিতে গত ১৯ জানুয়ারি বিকেলে কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন শতাধিক সংবাদকর্মী। এর জেরেই পরদিন ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। দুদিন পর আন্দোলনে অংশ নেওয়া ৪২ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়। এরপরও তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। এতে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশক সাবের হোসেন চৌধুরীর ব্যবসায়িক কার্যালয় কাকরাইলের এইচআর ভবন ঘেরাও করেন সংবাদকর্মীরা। একপর্যায়ে এইচআর ভবনের ভেতর থেকে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে স্টাফ রিপোর্টার এস এম মিজানসহ ৮-১০ জন সংবাদকর্মী আহত হন। এরপরই সাবের হোসেন চৌধুরী ফোনে ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন এবং ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সুরাহার আশ্বাস দেন। প্রায় দেড় মাস সময়ক্ষেপণের পর গত ২৬ মার্চ সমঝোতায় আসেন ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ও এইচআর ভবনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সিদ্ধান্ত হয়, পরদিন ২৭ মার্চ ছাঁটাইকৃত ৪২ জন তাদের পুরো টার্মিনেশন বেনিফিট বুঝে পাবেন। আর আন্দোলনে থাকা বাকি ৪৫ জনের চাকরি অব্যাহত থাকবে এবং তারা ২৭ মার্চ দুপুরের মধ্যে তিন মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পাবেন। তবে বঞ্চিতদের অভিযোগ, কথা রাখেনি এইচআর ভবন। ছাঁটাইকৃত ৪২ জনকে পুরো টাকা দেওয়া হয়নি। যে হিসাব দেখে তারা সমঝোতায় রাজি হয়েছিলেন, দেওয়া হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম টাকা। অন্যদিকে ছাঁটাই না হওয়া ৪৫ জন কর্মী কোনো টাকাই পাননি। 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর