বুধবার এইচআর ভবন অবরোধ করবেন ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীরা
![Icon](https://www.bangladesherkhabor.net/uploads/settings/ezgif-7-c58f72a6c2icon-2-1730277221.png)
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩৪
![বুধবার এইচআর ভবন অবরোধ করবেন ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীরা](https://www.bangladesherkhabor.net/uploads/news_photos/2025/02/03/Misbah-Jamil--(90)-67a0c5dd50b06.jpg)
অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী বকেয়া বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পরিশোধ এবং সাংবাদিক কর্মচারীদের চাকুরিচ্যুতির প্রতিবাদে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টা থেকে রাজধানীর কাকরাইলে এইচআর ভবন অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীরা। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচি ঘোষণা করেন ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন।
গত ২০ জানুয়ারি হঠাৎ একটি নোটিশ টানিয়ে ৩৩ বছরের পুরনো এই সংবাদপত্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নোটিশে বলা হয়, ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
পরদিন ২১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন দাবি মেনে নিতে মালিকপক্ষকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেধে দেন। অন্যথায় মালিকপক্ষের অফিস ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সে অনুয়ায়ী ২৩ জানুয়ারি কাকরাইলে কর্ণফুলী গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এইচআর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। ভোরের কাগজ কর্ণফুলী গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।
সেদিন ভোরের কাগজ খুলে দেওয়া না হলে পত্রিকার মালিক সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীকে তার অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্য ‘গুঁড়িয়ে ফেলতে হবে’ বলেও সতর্ক করেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।
প্রতিষ্ঠানটি খুলে দেওয়া ও বকেয়া পরিশোধের দাবিতে সংবাদকর্মীদের নানা কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে মালিকপক্ষকে দাবি মেনে নিতে ২৪ ঘন্টার সময় বেধে দেওয়া হয়। দাবি মানা না হলে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কাকরাইলে এইচআর ভবন অবরুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, ‘দাবি-দাওয়া আদায়ের আন্দোলনের কারণে কোনোরকম নোটিশ ছাড়া হঠাৎ একটি পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। সংবাদপত্রের ইতিহাসের এটি একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়।’
অবিলম্বে ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের দাবি দ্রুত মেনে নিয়ে সব দেনা-পাওনা পরিশোধ করার জন্য মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তা না হলে যতক্ষণ পর্যন্ত ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের দাবি আদায় না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ সব সাংবাদিক সংগঠন আমরা তাদের পাশে আছি এবং থাকব। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেস ক্লাব এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ প্রমুখ।
এ ছাড়া সমাবেশে বক্তব্য দেন, ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক মুকুল শাহরিয়ার, সম্পাদকীয় বিভাগের ইনচার্জ সালেক নাসির উদ্দিন, কম্পিউটার বিভাগের ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়া, উৎপাদন বিভাগের ইনচার্জ শরণ হাওলাদার, সিনিয়র রিপোর্টার এস এম মিজান ও সম্পাদনা সহকারি বিভাগের প্রধান মো. ইবরাহিম প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ভোরের কাগজ ৮ম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করেছে- এমন ঘোষণা দিয়ে সরকার থেকে ৯০০ টাকা কলাম ইঞ্চি বিজ্ঞাপনসহ সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। অথচ সাংবাদিক-কর্মচারীদের ওয়েজ বোর্ডের বেতন স্কেলের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। এমনকি কোনো নিয়োগপত্র দেয়নি। কর্মসূচি থেকে অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী সমস্ত বকেয়া বেতন-ভাতা ও সার্ভিস বেনিফিট দিতে হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়।
এমজে