
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে থাকা লাখ লাখ মানুষ বর্তমানে চরম সংকটের মুখে। জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ঘোষণা দিয়েছে, আগামী মাস থেকে রোহিঙ্গাদের মাসিক খাদ্য সহায়তা প্রায় অর্ধেক কমিয়ে দেওয়া হবে। আগে যেখানে প্রতিটি রোহিঙ্গাকে ১২.৫০ ডলার করে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হতো, তা আগামী মাস থেকে কমে ৬ ডলারে পরিণত হবে। এই ঘোষণার ফলে, অনেক রোহিঙ্গা নিজেদের খাদ্য মজুত করে রাখছেন, যাতে ভবিষ্যতে রেশন কমে যাওয়ার প্রভাব যেন সরাসরি না পড়ে তাদের উপর।
এমন পরিস্থিতিতে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। কিছু রোহিঙ্গা, যারা আগে কক্সবাজারে আশ্রয় নিতে চেয়েছিলেন, এখন তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার কথা বলছেন।
বৃহস্পতিবার ক্যাম্পের সদস্যরা বলেন, আমরা অসহায় হয়ে এখানে প্রাণ বাঁচাতে এখানে এসেছি। এখন আমরা বার্মায় (মিয়ানমার) কীভাবে ফেরত যাবো সেটা জানা দরকার।
শরণার্থী ও ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, ‘প্রত্যাবাসন দুই দেশের বিষয়। বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহায়তায় এর সমাধান হতে হবে।’
আজ শুক্রবার (১৪ মার্চ), জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যাবেন। তারা সেখানে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে ইফতারি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এই ইফতার অনুষ্ঠানটি বিশেষভাবে রোহিঙ্গাদের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং তাদের সংকটের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফর রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে একটি নতুন ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে ক্যাম্প এলাকায় রোহিঙ্গাদের ভেতর এ নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি। বরং দাতা সংস্থাগুলোর অর্থ বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে নাখোশ রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাদের দেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এদিকে, জাতিসংঘের সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ছাড়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন জটিল প্রক্রিয়া হতে পারে।
এ বিষয়ে শরণার্থী ও ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রত্যাবাসনের বিষয়টি মিয়ানমারের ও বাংলাদেশের বিষয়, বিশ্ব সম্প্রদায়ের বিষয়। এই বিষয়গুলো দুই দেশকে মিলেই ঠিক করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা কনফিডেন্স ফিরে পাবে। তারা মনে করবে বিশ্ব সম্প্রদায় তাদের পাশে আছে।
এমএইচএস