Logo

জাতীয়

দেশের দীর্ঘতম রেল সেতুর উদ্বোধন আগামীকাল

Icon

বাসস

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ২০:২৪

দেশের দীর্ঘতম রেল সেতুর উদ্বোধন আগামীকাল

নিয়মিত ট্রেন চলাচলের জন্য মঙ্গলবার খুলে দেয়া হবে নবনির্মিত যমুনা রেল সেতু। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সেতু উদ্বোধনের ফলে রেলপথের মাধ্যমে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ঢাকা ও অন্যান্য অংশের সাথে সংযুক্ত হবে।

সোমবার (১৭ মার্চ) সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ এম মাসুদুর রহমান জানান, আগামীকাল সকাল ১০টায় শুরু হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং এ জন্য সার্বিক প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। উদ্বোধনের পর উভয় দিক থেকে সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে।

তিনি বলেন, সেতুর দুটি লেনের একটি ব্যবহার করে গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাবল ট্র্যাক ডুয়েলগেজ সেতুর একটিতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

মাসুদুর রহমান বলেন, সেতুটি ৫০টি পিলার এবং ৪৯টি স্প্যানের ওপর নির্মিত। অত্যাধুনিক ইস্পাত প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্মিত এ সেতুর স্থায়িত্ব ১০০ বছর। এই কাঠামোটি বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রমাণ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সকাল ১০টায় সেতুর পূর্ব পাশে ইব্রাহিমাবাদ স্টেশনে অনুষ্ঠিত হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব এম ফাহিমুল ইসলাম, ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি ও জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মহা-পরিচালক ইতো তেরুয়ুকি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহা-পরিচালক এম আফজাল হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন।

অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে, উদ্বোধনী ট্রেনের অতিথি ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সকাল ১১টা ২০ মিনিটে পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে সেতু পার হয়ে সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তে সায়েদাবাদ রেলওয়ে স্টেশনে যাবেন এবং দুপুর ১২টায় পূর্ব প্রান্তে ইব্রাহিমাবাদ রেলওয়ে স্টেশনে ফিরে আসবেন।

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে, রাজশাহী থেকে সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ১২ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে যমুনা রেল সেতু পার হয়ে ঢাকায় পৌঁছায়।

পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সময় একটি ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সেতুটি অতিক্রম করেছিল।

নতুন রেলওয়ে সেতুটি যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে অবস্থিত। দেশের দীর্ঘতম রেল সেতুর উপর দিয়ে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে চলাচল করতে পারবে।

১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রায় ৩৮টি ট্রেন প্রতিদিন তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতে যাতায়াত করছে যা ঢাকাসহ বাংলাদেশের মূল অংশকে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সাথে সংযুক্ত করেছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ‘যমুনা রেল সেতু পার হতে ট্রেনের আগের তুলনায় কম সময় লাগবে। এতে উভয় দিকে সময় সাশ্রয় হবে।’ 

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার ২০২০ সালে ডেডিকেটেড রেলওয়ে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং একই বছরের ২৯ নভেম্বর এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

সেতু  নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা যার ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এবং বাকি অর্থ সরকার দিয়েছে। জাপানের ওটিজি এবং আইএইচআই যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছে।

সেতুর প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি ব্যবহারের জন্য ট্রেন যাত্রীদের পন্টেজ চার্জ হিসেবে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হবে, যা পদ্মা সেতুতেও আদায় করা হয়।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি রুট-ভিত্তিক ভাড়া চার্ট তৈরি করেছে যার অধীনে পন্টেজ চার্জ আদায়ের জন্য ট্রেনের আসনের শ্রেণির ওপর নির্ভর করে সর্বনিম্ন ৪৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করা হবে।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

যমুনা রেল সেতু রেল সেতু যমুনা সেতু

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর