রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত এবং ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন আরো মজবুত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বঙ্গভবনে খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির দেয়া এক সংবর্ধনা ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে খ্রিষ্টান নেতৃবৃন্দ এবং দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া শুভেচ্ছা ভাষণে তিনি এই আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সকল ধর্মের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের সেবা ও কল্যাণ। এজন্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সকল ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠান স্বাধীনভাবে এবং আনন্দঘন পরিবেশে পালন করে আসছে।’ 

এ সময় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দেশের খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। 

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘যিশুখ্রিষ্ট ছিলেন সত্যান্বেষী এবং আলোর দিশারী। তিনি পথভ্রষ্ট মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথে আহ্বান করেছিলেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘যিশুখ্রিষ্ট সর্বদা মানুষকে ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা, ন্যায় প্রতিষ্ঠাসহ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের শিক্ষা দিয়েছেন। 

রাষ্ট্রপতি এও মন্তব্য করেন, ‘যিশুখ্রিষ্টের শিক্ষা যদি সবার জীবনে প্রতিফলিত হয়, তবে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে।’

তিনি বলেন, ‘মন্দের বিনিময়ে কারো মন্দ না করে, সকল মানুষের দৃষ্টিতে যা উত্তম, ভেবে-চিন্তে তাই করার জন্য তিনি ভক্তদের পরামর্শ দিতেন।’

বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে, রাষ্ট্রপতি মনে করেন, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্য স্থাপনসহ যুদ্ধবিগ্রহপূর্ণ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যিশুখ্রিষ্টের শিক্ষা ও আদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘জাতি, ধর্ম এবং বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রচেষ্টায় একটি আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এবং বিশ্ব এগিয়ে যাবে শান্তি, কল্যাণ ও আলোর পথে।’

যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি বড়দিনের একটি কেক কাটেন এবং খ্রিষ্ট ধর্মীয় নেতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়াও তিনি ফটোসেশনে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ, ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস রান্ডেল, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, ফাদার আলবার্ট রোজারিও, রেভারেন্ড মার্থা দাস, সংশ্লিষ্ট সচিবগণ, বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিবৃন্দ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং ধর্মীয় নেতারা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এমএইচএস