নৌ শ্রমিকদের কর্মবিরতি : সারাদেশে আটকে আছে ১৫ লাখ টন পণ্য
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪
নৌযান শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতিতে নৌপথের পণ্য পরিবহণ খাতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। দেশজুড়ে ৪৫টি ঘাট ও চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আটকা পড়েছে প্রায় ১৫ লাখ টন পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে গম, মসুর ডাল, মটর ডাল, সয়াবিন বীজ, সার, কয়লা ও সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া জ্বালানি তেলসহ দেশের সবগুলো বিমান বন্দরের বিমানের জন্য জেট-ফুয়েল পরিবহনও বন্ধ রয়েছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) মেঘনা নদীতে লাইটার জাহাজের ৭জনকে খুনের ঘটনার বিচার ও নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে এ কর্মবিরতি পালন করছেন নৌযান শ্রমিকেরা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল ও বাংলাদেশ নৌ যান শ্রমিক ফেডারেশনের তথ্যমতে, কর্মবিরতির কারণে দেশের ৪৫টি ঘাটে ৭৩৮টি জাহাজে আটকা পড়ে প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য। আর বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ ও এসব জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে তোলা পণ্যের পরিমাণ পাঁচ লাখ টন।
৭ খুনের ঘটনার পরপরই প্রশাসনের কাছে ৪ দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। এসময় ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচার, নৌপথের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তোলেন তারা।
বাংলাদেশ নৌযান ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক নবী আলম বলেন, মেঘনা নদীতে জাহাজের সাতজন শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় চার দফা দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু এসব দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। এ কারণে কর্মবিরতি ঘোষণা দিই। তাতেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আমাদের ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দিনগত রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি চলছে।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম বলেন, নৌযান শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নেপথ্যের কারিগরদের চিহ্নিত করতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর তদন্ত চলছে।
তিনি আরও বলেন, নৌপথে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ নৌযানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে অফিস খোলার দিন রোববার আলোচনা করার বিষয়ে বলেছিল। এর আগে তাদের ঘোষিত কর্মবিরতি প্রত্যাহারের জন্য নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের আহ্বান জানিয়েছি। নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে। পণ্য খালাস না হলে বড় জাহাজের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ডিআর/ এটিআর