স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, পুলিশের তদন্ত পুলিশই করবে। অন্য কোনো সংস্থার এ তদন্ত করার সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের অডিটরিয়ামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের সীমান্ত এলাকায় কোনো উত্তেজনা নেই এবং পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। বিজিবি ও বিএসএফের ডিজি পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্ত সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আগামী মাসে আলোচনা হবে।
পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত কে করবে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশের তদন্ত পুলিশই করবে। অন্য কোনো সংস্থার এ তদন্ত করার সুযোগ নেই। বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পুলিশই তদন্ত করে থাকে, অন্য কোনো বাহিনী নয়।
এদিকে, গত তিন মাস কাজ করে পুলিশ সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৫০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। প্রতিবেদনে থাকছে বেশ কিছু সুপারিশ ও মন্তব্য। সুপারিশে মানবিক পুলিশ গঠনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ফৌজদারি মামলা তদন্তে আলাদা তদন্ত সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। প্রস্তাব অনুযায়ী, পুলিশের বদলে মামলার তদন্ত করবেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা। তদন্তকাজ তদারক করবেন সংশ্লিষ্ট অ্যাটর্নি বা প্রসিকিউটর।
কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, তদন্ত সংস্থায় নিয়োজিত জনবল পুলিশ বাহিনী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হবে। তাদের নিয়োগ, চাকরির শর্তাবলি, নিয়ন্ত্রণ, বাজেট, অবকাঠামো ও আনুষঙ্গিক বিষয় একটি স্বতন্ত্র সংগঠন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোভুক্ত হবে। পুলিশ বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার কাজের সুনির্দিষ্ট বিভাজন থাকবে।
সংস্কার কমিশনের সূত্র বলছে, তদন্তের ক্ষমতা পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে পৃথক তদন্ত সংস্থাকে দিলে তদন্ত দ্রুত ও স্বচ্ছ হবে। এতে বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি কমবে, প্রকৃত আসামিদের সাজা হবে, নির্দোষ মানুষ ফাঁসবে না এবং তদন্তে আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত হবে।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য আইনজীবী তানিম হোসেইন শাওন সম্প্রতি বলেন, প্রাথমিক প্রতিবেদনে সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম, ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় যথাযথ ও প্রভাবমুক্ত তদন্ত নিশ্চিতে স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা গঠন; স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা এবং স্বল্প ব্যয়ে ও স্বল্প সময়ে কার্যকর বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে। এগুলোর পাশাপাশি বিচার বিভাগের আর্থিক স্বাধীনতা, পর্যাপ্ত বাজেট নিশ্চিত করাসহ বেশ কয়েকটি বিষয় কমিশনের বিবেচনায় রয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসবের প্রতিফলন থাকবে।
সাকিব/এমবি