২ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক
প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:৩১
সারাদেশে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে বন্ধ রয়েছে রেল যোগাযোগ। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে রেল উপদেষ্টা কমলাপুরে এসে কথা বললেও সিদ্ধান্তে অনড় রেলের রানিং স্টাফরা।
চলমান এই সংকট নিরসনে এরই মধ্যে কমলাপুর রেলস্টেশিনের ভিআইপি কক্ষে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন রেলসচিবসহ রেলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ও রাজনৈতিক নেতারা। বৈঠকে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত আছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস। বৈঠকটি প্রায় ২ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে চললেও কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
কর্মবিরতিতে থাকা রেলের রানিং স্টাফদের একটি প্রতিনিধি দলকে বৈঠকে ডাকা হয়। পরে কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের দুই নেতাসহ একটি দল বৈঠকে যান। সকল দাবি-দাওয়া বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাসকে জানিয়ে আন্দোলনরতরা বেরিয়ে আসেন।
পরে কমলাপুর রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে আন্দোলনরত রেলের রানিং স্টাফদের সাথে কথা হয় বাংলাদেশের খবরের।
বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি শরীফুল ইসলাম বলেন, কোনো কথাবার্তা ছাড়াই ১৬২ বছরের পুরনো ভাতা গত চার বছর আগে প্রজ্ঞাপন করে বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়। চার বছর ধরে রেল ও অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এই ভাতা পুনরায় চালুর দাবি জানিয়ে আসছি। গত এক মাস আগেও আমাদের বলা হয়েছিল, এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে। আমরা এক মাস সময়ও দিয়েছি। কিন্তু এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও সমাধান না পেয়ে গতকাল (সোমবার) আমরা আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি-দাওয়া বৈঠকে উপস্থিত শিমুল বিশ্বাসসহ অন্যদের জানিয়েছি। তবে আমরা বৈঠকে অংশ নিইনি। সেখানে রেলসচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন। এখন দেখা যাক তারা কি সমাধান দেয়।
এদিকে একান্ত আলাপে সাব-লোকো মাস্টার মজিবুর রহমান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, রেল চলে ব্রিটিশ আইনে। এর বাইরে এক চুলও যাওয়ার সুযোগ নেই। যদি একটি দুর্ঘটনাও ঘটে সেটিও আইনের আওতায় থাকবে। ব্রিটিশ আইন মেনেই যেখানে রেল পরিচালিত হচ্ছে, আমাদের দাবিগুলো তো ওই আইনের মধ্যেই আছে। সবকিছুই ওই আইনেই চলে। শুধু আমাদের সুযোগ-সুবিধা দিতে গেলেই অর্থ মন্ত্রণালয় ওই আইনের কথা ভুলে যায়।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ২০২১ সালে অর্থ মন্ত্রণালয় কেন হঠাৎ প্রজ্ঞাপন দিয়ে এসব বন্ধ করল। এর বিরুদ্ধেই আমাদের কর্মসূচি। এসব সুযোগ সুবিধা ফের প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে নিশ্চিত না করলে আমরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না।
এদিকে, সারাদেশে রেল চলাচল বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেকেই বিভিন্ন স্টেশনে আসেন। কিন্তু নির্ধারিত গন্তব্যে ট্রেন না চলায় ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। রেল চলাচল বন্ধ থাকায় দেশের বিভিন্ন স্টেশনেও ভাঙচুর চালান বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা। অনেকেই আবার বাসে করে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে। এতে করে বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী, শিশু, রোগী ও বয়স্ক যাত্রীরা।
রেল চলাচল বন্ধ থাকায় বিআরটিসির মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার কমলাপুর রেলস্টেশনে আগত যাত্রীদের অনেকেই নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে বিআরটিসির বাসে যাত্রা করেছেন।
এনএমএম/ওএফ