Logo

জাতীয়

পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৫ বছর : ন্যায়বিচার দাবি শহীদ সেনাদের পরিবারের

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৩৭

পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৫ বছর : ন্যায়বিচার দাবি শহীদ সেনাদের পরিবারের

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, পিলখানায় সংগঠিত হয়েছিল এক ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ। যা বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম ‘নির্মম অধ্যায়’ হিসেবে বিবেচিত হয়। সেদিন ‘বিপথগামী বিডিআর’ (বর্তমানে বিজিবি) সদস্যদের বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নির্মমভাবে নিহত হন। শহীদদের পরিবার ও বেঁচে ফেরা অফিসাররা এ ঘটনায় ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেদিন দায়িত্বরত নিরস্ত্র সেনা কর্মকর্তাদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়, লাশ বিকৃত করা হয় এবং পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টাও চালানো হয়। এমনকি লাশগুলো গণকবর দেওয়া, ড্রেনে ফেলে দেওয়া এবং গুম করার মতো নৃশংস কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়। অফিসারদের পরিবারকেও চরম নির্যাতনের শিকার হতে হয়, নারী ও শিশুদেরও টেনে হিঁচড়ে কোয়ার্টার গার্ডে বন্দি করা হয়। বিদ্রোহের সময় পিলখানায় প্রায় ৫ হাজার বিডিআর সদস্য উপস্থিত ছিলেন এবং বিপুলসংখ্যক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, তৎকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত আনিসুজ্জামান তদন্ত কমিশন, সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটি, সিআইডি তদন্ত এবং বিডিআর ইউনিট তদন্তের মাধ্যমে বিদ্রোহীদের সরাসরি অংশগ্রহণ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। সিভিল কোর্ট ও বিডিআর কোর্টে বিপথগামী জওয়ানদের সাজা প্রদান করা হয়। শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘যারা এ ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তারা নিরপরাধ নন। তাদের মুক্তির দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তাই আমরা অবিলম্বে সাজাপ্রাপ্তদের শাস্তি কার্যকরের দাবি জানাই।’

শহীদ পরিবারগুলো সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে, মামলার সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য আরও অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে আইনি লড়াই শক্তিশালী করার। তারা বলেন, ‘বিডিআর হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে সরকারের উচিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।’

শহীদ পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত ১৫ বছরে অভিযুক্ত বা সাজাপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্যরা কোনো দাবি নিয়ে মাঠে আসেনি। অথচ এখন তারা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আন্দোলন করছে, যা বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করার অপচেষ্টা।’ তারা মনে করেন, এই আন্দোলনের মাধ্যমে প্রকৃত খুনিদের আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে।

শহীদ পরিবারদের বিশ্বাস, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পেছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল। তারা সরকারের কাছে দাবি জানান, ‘এই ষড়যন্ত্রের পেছনের নেপথ্য ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত পরিচালনা করা হোক এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করা হোক। প্রয়োজনে বিদেশে থাকা দোষীদের দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানানো হয়েছে। তারা বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে এক দিনে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা হত্যার নজির নেই। তাই দিনটি জাতীয়ভাবে স্মরণীয় করা উচিত।’

এএইচএস/এমজে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর