Logo

জাতীয়

রাশিয়ার যুদ্ধ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসেছেন ভুক্তভোগী, ১ পাচারকারী গ্রেপ্তার

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৪১

রাশিয়ার যুদ্ধ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসেছেন ভুক্তভোগী, ১ পাচারকারী গ্রেপ্তার

নেপালে পালিয়ে যাওয়ার সময় মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য ফাবিহা জেরিন তামান্নাকে সিআইডি'র টিএইচবি শাখার একটি টিম গ্রেপ্তার করেছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ফাবিহা জেরিন তামান্না স্ত্রীম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের অংশীদার।

এই চক্রের সদস্যরা রাশিয়ায় মাসে ২ থেকে ২.৫০ লক্ষ টাকা বেতনে চকলেট ফ্যাক্টরি, ক্লিনার অথবা বাবুর্চির কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ জনকে প্রথমে সৌদি আরবে ওমরাহ ভিসায় পাঠায়। সেখানে তাদের ওমরাহ হজ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেয়। সুলতান তাদেরকে দাস হিসেবে রাশিয়ান সোলজারদের কাছে হস্তান্তর করে।

সেখানে তাদেরকে কাজ না দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাধ্য করা হয়। কেউ অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। খাবার বন্ধ করে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের মানসিক শক্তি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

সিআইডি প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে যে, যুদ্ধে নাটোর সিংড়া থানার হুমায়ুন কবির নামক এক ব্যক্তি নিহত এবং ঢাকা কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামক একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

এই ১০ জনের মধ্যে নরসিংদীর পলাশ থানার বাসিন্দা মো. আকরাম হোসেন (২৪) প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গত ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ফিরে এসে তিনি অন্যান্য ভিকটিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যুদ্ধাহত আমিনুলের স্ত্রী ঝুমু আক্তার বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর সিআইডি তদন্ত শুরু করে এবং শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফাবিহা জেরিন তামান্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। সিআইডি আরও জানতে পেরেছে, একইভাবে ১০ জনের আরেকটি দল সৌদি আরবে অবস্থান করছে। তারা রাশিয়া নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করানোর জন্য প্রস্তুত ছিল, তবে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তারা রাশিয়ায় যেতে অস্বীকার করেছে এবং তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে তারা সৌদি আরবে কোনো কাজ করতে পারছে না এবং দেশে ফিরতেও পারছে না।

এ ধরনের সাধারণ নিরীহ মানুষদের যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রেরণা যুগিয়েছে গ্রেপ্তারকৃতের ভাই তুহিন, যিনি বর্তমানে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন।

সিআইডি ভুক্তভোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং মানব পাচারের এই নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি তদন্ত ও গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।

ডিআর/এমএইচএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর