Logo

মতামত

ধর্মীয় শান্তি ও সহিষ্ণুতা

জয় খ্রীষ্টফার বিশ্বাস

জয় খ্রীষ্টফার বিশ্বাস

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৪২

ধর্মীয় শান্তি ও সহিষ্ণুতা

আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশের আরেকটি পরিচয়  হলো এটি ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশ। ধর্মীয় সহাবস্থানের এ দেশের সম্প্রীতির চিত্র বর্ণনা করতে গিয়ে বন্দে আলী মিয়া লিখেছেন ‘পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই, একসাথে খেলি আর পাঠশালে যাই।’ কিন্তু বর্তমানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা সম্প্রীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারিনি ।

কাজে-কর্মে চিন্তুাচেতনা ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের বিশ্বাস সুন্দর না হলে চিন্তা সুন্দর হয় না। চিন্তা সুন্দর না হলে কাজও সুন্দর হয় না। শিক্ষার মাধ্যমে সুচিন্তার প্রসার ঘটাতে হবে। শান্তি ও সহিষ্ণুতা শব্দ দুটি একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদের সহিষ্ণু হতে হবে ।

শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রথম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে অসহিষ্ণুতা। অসহিষ্ণুতার জন্য সামান্য কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যায়। বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা এবং নেতারা কখনো এমন শব্দবাক্য ব্যবহার করেন, যা অন্য ধর্মাবলম্বীদের ছোট করে উপস্থাপন করে। এটা উচিত নয়; এতে পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ ও অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি হয়। 

প্রতিটি ধর্মের মানুষকে সম্মান করা প্রয়োজন। একে অন্যকে সম্মান প্রদর্শন করে সমাজে সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। অন্য ধর্মের একজন মানুষ মৃত্যুবরণ করলে ওই পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়াতে পারি  ও সান্ত¡ না দিতে পারি। এতে সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে দেখা যাচ্ছে কর্মহীন তরুণেরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে অসহিষ্ণুতার পথে ধাবিত হচ্ছে। সমাজে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। তার সাথে সামাজিক গণমাধ্যমের ফলেও যুব সমাজ শান্তি ও সহিষ্ণুতা বিঘ্নিত করছে। 

যুব সমাজে ও অন্যান্য সকলের জন্য মানসিক কল্যাণ, আন্তসম্প্রদায় সম্পর্ক এবং সামাজিক মাধ্যম এ তিনটি বিষয় শান্তি ও সহিষ্ণুতা রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল অনুষ্ঠান নির্মাণ ও প্রচার করে জনগণ ও যুব সমাজের কাছে ধর্মীয় শান্তি ও সহিষ্ণুতা রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। কেউ যদি আমাদের সম্প্রদায়ের অবমাননাকর কিছু করে তাহলে ধৈর্যধারণ করা উচিত। তাদের শাস্তি দেশের আইন ও বিচার বিভাগ দিবে। বাংলাদেশে ধর্মীয় শান্তি ও সহিষ্ণুতা  রয়েছে। সহিষ্ণুতা না থাকলে যুগ যুগ ধরে ধর্মীয় স্থাপনাগুলো পাশাপাশি টিকে থাকত না। দেশের প্রায় অনেক গ্রামে ও শহরে একত্রে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর মানুষ একসঙ্গে বসবাস করে। সহিষ্ণুতা না থাকলে এটি সম্ভব হতো না। আমরা ধর্মীয় শান্তি, সম্প্রীতি ও সহিষ্ণুতা বৃদ্ধির জন্য পহেলা বৈশাখ, ঈদ, বড়দিন, দুর্গাপূজা, বোদ্ধপূর্ণীমা ইত্যাদি উৎসবগুলো একত্রে মিলে পালন করি। যার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি আমাদের মধ্যে ধর্মীয় শান্তি ও সহিষ্ণুতা বিদ্যমান। আমরা সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে ধর্মীয় শান্তি ও সহিষ্ণুতা স্থাপন করছি। যা সকলের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সফল হবে।  

এমএইচএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর