তৌহিদি জনতাকে অবশ্যই সাবধান হতে হবে : মাহিন সরকার

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ১৩:১১
-67c94a928375b.jpg)
তৌহিদি জনতাকে সাবধান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।
মাহিন সরকার বলেন, ‘ওই ব্যক্তির চাকরি যায়নি। এটা তাহলে গুজব? এক পোস্টের মাধ্যমে ইতিমধ্যে দেখলাম ধুয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেখুন, মানুষ ভুল করে এবং অনুতপ্তও হয়। আমার ভুল হলে মাফ চাইবো অবশ্যই। সেখানে শব্দচয়ন আমি নিজে বেছেই করেছি। মৌলভিদের তথা তৌহিদি জনতার অবশ্যই সাবধান হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘তবে এই বিষয়টায় যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, মনে হচ্ছে প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা আছে। আমি বলছিলাম তৌহিদি জনতার মব সৃষ্টির ভুলকে শুদ্ধ বানানোর প্রয়াস ঠিক নয়। এগুলো মিডিয়ায় যায় আন্তর্জাতিকভাবে।’
নাগরিক পার্টির এই নেতা বলেন, ‘শাতিম ইস্যুতে কথা বলাটা এতটাই সেনসিটিভ যে যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, তাহলে একটা পোস্টের দায় আমার বহন করতে হতে পারে। তৌহিদি জনতা বা আলেম শ্রেণির অবশ্যই উচিত ছিল এ ধরনের কাজ যেন না করতে পারে, সে জন্য রাষ্ট্রীয় আইন তৈরির দাবি করা। কিন্তু এটা সেক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, রাষ্ট্র যেহেতু কালেক্টিভ জায়গা থেকে পলিসিতে যায়, সেহেতু ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হানার জন্য একটা সর্বধর্মীয় আইন করবে বা করে।’
তৌহিদি জনতা ও আলেমদের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বা তাদের পক্ষের শক্তিরা ৫ আগস্টের পর থেকেই এখানে একটি জঙ্গিরাষ্ট্রের উত্থান ঘটেছে দেখাতে তৎপর। হয়তো মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বা ওস্তাদদের আবেগ আছে অনুভূতি আছে এই ব্যাপারে অনেক বেশি। কিন্তু তাদের সামষ্টিক দায়িত্ব কি ছিল না জাতির সামনে শাপলার এবং মোদিবিরোধী আন্দোলনের সময় ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়া? সামষ্টিক জায়গা থেকে চেয়েছেন তারা? শাপলায় কতজন শহীদ এবং আহত হয়েছেন তার ডকুমেন্টেশন করা হয়েছে?’
শাপলা আর শাহবাগ বাইনারি করে চলা মানে সংঘাতকে উসকে দেওয়া বলে মনে করেন মাহিন সরকার। তিনি বলেন, ‘দাবি হতে পারত এরকম। আর একটি কথা! মাসখানেক আগের একটি পোস্টে আমি লিখেছিলাম যে অনেক মাদ্রাসার ওস্তাদ তথা আলেমই আন্দোলনের সময় নেগেটিভ ভূমিকা পালন করেছে। সেখানেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখেছি। বিষয়টা এমন, ইস্যু যা-ই হোক তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না।’
অনেক মাদ্রাসায় ওস্তাদরা শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে দ্বিতীয় স্বাধীনতায় প্রায় ৮০ জন হাফেজ শহীদ হলো, সেই দ্বিতীয় স্বাধীনতা সবার জন্যই অনেক মূল্যবান। মাদ্রাসা যেহেতু পরিচালিত হয় ওস্তাদদের দ্বারা, সেহেতু এখানে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অনেক জায়গায়ই তাদের অবাধ্য হয়ে নেমেছিল। কারণ অনেক মাদ্রাসায়ই ওস্তাদরা শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা করেছিল। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ভেতর এবং বাহির দুই জায়গায়ই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।’
ইমান-আমল দেখার বা দেখানোর জায়গা ফেসবুক নয় বলে মনে করেন নাগরিক পার্টির এই যুগ্ম সদস্যসচিব। তিনি বলেন, ‘দেখলাম ধুমধাম যাকে ইচ্ছা তাকে গিয়ে শাহবাগী বলা হচ্ছে এখন। এগুলো কি ঠিক? এই সময়ে এসে সামষ্টিক জায়গা থেকে দেশের স্বার্থে না ভাবলে হবে না। এগুলো বেশ হতাশাজনক ব্যাপার। আর আরেকটি কথা, কারও ইমান-আমল দেখার বা দেখানোর জায়গা ফেসবুক না।’
- ডিআর/এমজে