ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে : চরমোনাই পীর

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:০২
-67f26d73db7d2.jpg)
ভারতের লোকসভায় বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস মুসলমান জনগোষ্ঠীকে আরও ক্ষমতাহীন ও নিরাপত্তাহীন করে তুলবে। ওয়াকফ বিল ভারতের সংবিধানবিরোধী ও ফেডারেল কাঠামোর পরিপন্থী। এ বিল পাসের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে এই আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)।
রোববার (৬ এপ্রিল) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ভারতের মুসলমানদের নিঃস্ব করে মুসলমানদের সম্পত্তিতে সরাসরি হস্তক্ষেপের জন্যই ওয়াকফ বিল পাস করা হয়েছে। ভারতের লোকসভায় ওয়াকফ বিল পাস মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এর মাধ্যমে মুসলমানদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। ভারতের এ বিল নতুন করে সঙ্কট সৃষ্টি করবে। ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজাধারীরা ভারতকে মুসলিম শূন্য করার নীলনকশায় মেতে উঠেছে। এ আইনের মাধ্যমে মুসলিমদের স্বার্থে চরমভাবে আঘাত করা হয়েছে।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, মুসলমানদের সম্পত্তিতে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় মোদি সরকার। নতুন করে দাঙ্গা বাধিয়ে মুসলমানদের হত্যার জন্য ব্যাপক বিরোধিতা সত্ত্বেও বিলটি পাস করেছে বিজেপি সরকার।
ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ভারতের বিরোধী দলগুলো ও মুসলমান জনগোষ্ঠীর প্রবল বিরোধিতার মুখে পাস হওয়া এই বিলের মাধ্যমে জমি-জিরাত সংক্রান্ত মুসলমানদের শত শত বছর ধরে চলে আসা স্থাবর সম্পত্তির ওপর গুরুতর আঘাত।
তিনি বলেন, এই বিল মুসলমান জনগোষ্ঠীর ধর্মাচারণের পরিপন্থী। এই বিল ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় বা ফেডারেল কাঠামোর ওপরও বড় আঘাত। এই বিলের মধ্য দিয়ে রাজ্যের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমরাও সদস্য হতে পারবেন। এমনকি তারা বোর্ডের প্রধান নির্বাহীও হতে পারবেন। ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবহারের ভিত্তিতে স্বত্বাধিকারী হওয়ার বিধানও বাস্তবে বাতিল হয়ে যাবে।
মুফতী রেজাউল করীম মুসলমান বিদ্বেষী ও বিভাজন সৃষ্টিকারী অশুভ তৎপরতা থেকে সরে আসতে বিজেপি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে ভারতের ওয়াকফ বোর্ডের অধীনস্থ জমির পরিমাণ আনুমানিক ৯.৪ লাখ একর। এই বিশাল জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত আছে প্রায় ৮৭,২৩৫১টি ধর্মীয় ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান। এই সম্পত্তির বাজারমূল্য লক্ষ লক্ষ কোটি রুপি, যা উপমহাদেশে মুসলিম সমাজের হাজার বছরের ধর্মীয়, সামাজিক ও মানবিক অবদানের প্রতীক। এই বিলের মাধ্যমে সেই সম্পদের ওপর রাষ্ট্রীয় হিন্দুত্ববাদী দখল প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা স্পষ্ট। এটি কোনো আইনি সংস্কার নয়; বরং মুসলমানদের ধর্মীয় পরিকাঠামোকে ধ্বংস করে দেওয়ার হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদের নগ্ন রূপ।
মুফতী রেজাউল করীম আরও বলেন, বাবরি মসজিদের রায়, কবরস্থান দখল, আজান ও হিজাব নিষিদ্ধকরণ, মুসলিম ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা, সংখ্যালঘু নিধন-এই সবকিছুই আজকের ভারতের ইসলামবিদ্বেষী নীতির বহিঃপ্রকাশ। ওয়াকফ বিল সেই ধারাবাহিকতাতেই একটি বিপজ্জনক সংযোজন।
ডিআর/বিএইচ