সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আগ্রহী নয় জাতীয় পার্টি
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৩৫
ছবি : বাংলাদেশের খবর
সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় পার্টি আগ্রহী নয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সভায় তিনি এ কথা জানান। দলটি মনে করে, সংস্কার হতে হবে একটি নির্বাচিত পার্লামেন্টে।
জাতীয় পার্টির সাথে বর্তমান সরকার বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেন গোলাম মোহম্মদ কাদের। তিনি বলেন, ‘কেউ জানে না কেমন হবে দেশের ভবিষ্যৎ। এমন বাস্তবতায় আমাদের রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। একটি নির্বাচন হবে, আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ দলটির। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের স্বাভাবিক রাজনীতিতে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে।’ তিনি প্রশ্ন করেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে বর্তমান সরকার সবার জন্য লেভেল প্লেইংফিল্ড করতে পারবে? নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হবে?’
বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ মনে করেন না গোলাম মোহাম্মদ কাদের। ‘এই সরকার সঠিক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারবে না বলেও সন্দেহ আছে। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারই দেশের বর্তমান অচলাবস্থা ও অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি দিতে পারে।’
নির্বাচিত পার্লামেন্ট ছাড়া কোনো সংস্কারই বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে দাবি করেন জাতীয় পার্টির এই শীর্ষ নেতা। তিনি বলেন, ‘অনেক আগেই আমরা সংবিধান সংস্কারের দাবি তুলেছি। সংস্কার হতে হবে একটি নির্বাচিত পার্লামেন্টে। যদি সব রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে সংস্কার হয়, তা নির্বাচিত পার্লামেন্টে গ্রহণযোগ্য করা যায়। বর্তমানে দেশকে বিভক্ত করে যে সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে, তা একপেশে। তা বাস্তবতার ততটা সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’
সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় পার্টি আগ্রহী নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত পার্লামেন্টে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।’
অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে দেশ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। বলেন, ‘সরকারের সহায়তায় কয়েকটি রাজনৈতিক দল মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা সরকারের সাথে সম্পর্ক রেখে সরকারি দলের মতো আচরণ করছে। তারা ক্ষমতার মোহে দেশকে বিভক্ত করছে।’
বিভিন্ন অজুহাতে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করতে চাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘অপরদিকে, দেশে অরাজক পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বেকারত্বের বিস্তার ব্যাপক। এ কারণেই দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ তাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।’
জাতীয় পার্টিও মাঠে থাকবে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘আমরা দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের রাজনীতিতে কখনোই পিছপা হব না। শত নির্যাতনেও আমরা মানুষের অধিকারের প্রশ্নে চুপ থাকব না।’
মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে রাজপথে থাকার অঙ্গীকার জানিয়ে কাদের বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। মানুষের জানমালের ও ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই। প্রশাসনের কাছে কোনো সেবা পাচ্ছে না মানুষ।’
প্রেসিডিয়াম সভায় বক্তব্য দেন, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এ.টি.ইউ.তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রতনা, আব্দুর রশীদ সরকার, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখ্ত, নাজমা আখতার, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান হোসেন মিয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, মো. জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, জহিরুল আলম রুবেল, শেরীফা কাদের, মাসরুর মওলা, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. আরিফুর রহমান খান, মো. আশরাফুজ্জামান আশু।
এএস/এমজে